চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: ‘রাস্তায় নয়, সব কর্মকাণ্ড সংসদ কেন্দ্রিক করতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে, সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে, সেগুলোকে এক বছরের মধ্যে সব ঠিক করে ফেলা, এটা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট আসবে, সেটাকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের নজর দিতে হবে। সব কর্মকাণ্ডকে পার্লামেন্ট কেন্দ্রিক করতে হবে।’
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর গ্রিন রোডে শ্রমিক সংগঠনের এক সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের এই সাধারণ সভা ও সম্মেলন হয়। সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব হিসেবে মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুকে সভাপতি ও হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন গঠিত নির্বাচন কমিশনার আনোয়ার হোসাইন।
ফখরুল বলেন, এটা না করলে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি ফাংশন করবে না…এ কথাগুলো আমাদের বুঝতে হবে। পৃথিবীর যেসব দেশে পার্লামেন্ট ডেমোক্রেসি সফল হয়েছে সবগুলোতে কিন্তু পার্লামেন্ট হচ্ছে কেন্দ্রবিন্দু রাজনীতির… করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাস্তা থেকে উঠে চলে আসতে হবে পার্লামেন্টে। আর কতদিন রাস্তায় থাকবেন? ৫০ বছর তো আমরা রাস্তায় চলছি। এগুলোকে ঠিক করে এই জাতীয় সনদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে যদি আমরা একটা কালচারে পরিণত করতে পারি সেই চেষ্টা আমাদের করতে হবে।
সব রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, আমাদের মধ্যে ছোটোখাটো ভিন্নতা, যে দূরত্ব আছে সেটাকে দূর করে যেভাবে সনদ স্বাক্ষর করতে পেরেছি….আসুন আগামী নির্বাচন সেইভাবে আমাদের দূরত্বকে দূর করে নির্বাচনটাকে একটা সত্যিকার অর্থেই একটা অর্থপূর্ণ নির্বাচনের পরিণত করি।
তিনি আরও বলেন, অর্থাৎ একটা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক, সেটা সবারের কাছে নির্বাচন হোক এবং যারা নির্বাচিত হবেন তারা আমাদের পার্লামেন্টকে সত্যিকার অর্থে প্রাণবন্ত করে গড়ে তুলবেন, অর্থবহ করবেন এবং সেই পার্লামেন্ট হবে আমাদের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু এভাবে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। গণতন্ত্রকে যদি আমরা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হই তাহলে আমার ধারণা ও বিশ্বাস সেখানে সব শ্রেণি, শ্রমিক শ্রেণির দাবি-দাওয়া সেখানে পূরণ হবে, স্বীকৃত হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল একটা ঐতিহাসিক বলতে গেলে পলিটিক্যাল ইভেন্ট হয়েছে। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ঐতিহাসিক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছি এবং এটা সত্যি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনন্য ঘটনা যে রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন, মূলনীতির সংশোধন এবং একই সঙ্গে আমাদের রাজনীতিকে আরো স্বচ্ছ করা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া, গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থেই যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আরো বেশি উন্নত করা, গণতন্ত্রকে গণতন্ত্রের মতো চলতে দেয়া এবং গণতান্ত্রিক কৃষ্টি অর্থাৎ ডেমোক্রেটিক কালচার পুরোটা এই ব্যাপারগুলো সমাজের মধ্যে সবগুলো নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়কারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন