মিরসরাইয়ে পিকআপ-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ— নিহত ৩, আহত ২

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বালুবোঝাই পিকআপ ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলে ৩ জন নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছে ২ জন।

শনিবার (১৪ জুন) বিকালে বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কের চিনকীরহাট এলাকার আজমনগর স্কুলের সামনে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

নিহতরা হলেন— সাইফুল ইসলাম শাহিন (১৭), সুমি আক্তার (২৫) ও তার ছেলে মানারুল (৩)। নিহতরা সবাই উপজেলার ৭ নম্বর কাটাছরা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম বামনসুন্দর এলাকার বেলু বলী বাড়ির বাসিন্দা।

আর আহত ২ জন হলেন— অটোরিকশা চালক জিয়া উদ্দিন বাবলু (৩০) ও তার মেয়ে তানিশা (৭)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, চিনকীরহাট এলাকায় একটি বেপরোয়া গতির ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে সাইড দিতে গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং বালুবোঝাই পিকআপটি মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। পিকআপটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে সড়কে পাশে উল্টে পড়ে যায়।

পরে আহতদের উদ্ধার করে বারইয়ারহাট বিএম হাসপাতালে নিয়ে গিলে একজনকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক। এ সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকসহ আরো ৪ জন গুরুতর আহত হয়। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠালে সেখানে দু’জনের মৃত্যু হয়।

নিহত সাইফুল ইসলাম শাহিনের বড় ভাই মো. রুবেল বলেন, শনিবার দুপুরে আমার চাচাতো ভাই জিয়া উদ্দিন বাবলু তার পরিবার নিয়ে নিজে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ড্রাইভ করে করেরহাট ইউনিয়নের হাবিলদারবাসা এলাকায় তার শশুর বাড়িতে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কের চিনকীরহাট এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে সাইড দিতে গিয়ে বাবলু তার গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুবোঝাই পিকআপভ্যানের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে আমার ভাই সাইফুল ইসলাম শাহিন মারা যায়। এছাড়াও আমার চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী, ছেলেও চট্টগ্রাম মেডিকেলে মারা গেছে।

আহত সিএনজিচালক জিয়া উদ্দিন বাবলুর ভাই সাইফুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আমার ভাই তার মেয়ে বেঁচে গেলেও স্ত্রী ও ছেলেকে বাচাতে পারিনি। উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে মা ছেলে মারা যায়। আমার ভাইয়ের অবস্থাও ভালো না। কিভাবে কি হয়ে গেলো কিছুই বুঝতে পারছি না।

বারইয়ারহাট বিএম হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. আরিফ বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পাঁচজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে সাইফুল ইসলাম শাহিন (১৭) নামে এক কিশোর হাসপাতালে আনার আগেই মারা যায়। এছাড়াও সুমি আক্তার ও মানারুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাকিন হোসেন বলেন, শনিবার দুপুরে বারইয়াহারট-খাগড়াছড়ি সড়কের চিনকিরহাট এলাকায় নম্বরবিহীন সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং বালুবোঝাই পিকআপের (চট্ট মেট্রো-ড ১১-২৭৫২) মুখোমুখি সংঘর্ষে শাহিন নামে এক সিএনজি অটোরিকশার যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত এবং আহত হয়েছেন আরও চারজন। আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। সেখানে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে শুনেছি।

তিনি আরও বলেন, নিহত শাহীনের মরদেহ ও দুর্ঘটনাকবলিত গাড়িগুলো উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। পিকআপ চালক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ মামলা দায়ের করেনি। মামলা করলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন/জেএইচ

Scroll to Top