চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: তরুণ শক্তিকে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে কাজে লাগাতে সরকারের বড় ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিন।
তিনি বলেন, যুবসমাজের মাঝে রয়েছে অসীম সম্ভাবনা ও প্রতিভা। এই তরুণ শক্তিকে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির কাজে লাগাতে হলে সরকারকে বড় পরিকল্পনা নিতে হবে। আজকের দিকভ্রান্ত যুবকদের সঠিক পথে আনতে প্রয়োজন দিকনির্দেশনামূলক উদ্যোগ।
শনিবার (২১ জুন) বিকেলে নগরের জিইসি কনভেনশন হলে বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনার ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত যুবসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মতিন আরও বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে দেশি-বিদেশি লুটেরা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালের (এনসিটি) পরিচালনার দায়িত্ব কোনোভাবেই বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না। এই টার্মিনাল পরিচালনার জন্য আমাদের দেশীয় অপারেটররাই যথেষ্ট যোগ্য।
ইসলামী যুবসেনা চট্টগ্রাম নগর জেলার সভাপতি মুহাম্মদ আলমগীর ইসলামের সভাপতিত্বে এবং ওয়াহিদুল আলম, ইশতিয়াক রেজা, চৌধুরী সরওয়ার ও ফারুক হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ আমান উল্লাহ আমান।
উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য দেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফী (ম.জি.আ)।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ অছিয়র রহমান আল কাদোরী, সৈয়দ মোহাম্মদ মছিহুদ্দৌলা, পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল, আবদুর রহিম, মাওলানা মীর আব্দুর রহিম মুনিরী, শেখ আরিফুর রহমান, মাওলানা ফেরদৌস আলম, অধ্যাপক মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন, মুহাম্মদ দিদারুল আলম, মাষ্টার মুহাম্মদ ইসমাইল, আজিম উদ্দিন আহমদ, এইচ এম শহিদুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন, মুহাম্মদ শাখাওয়াত এবং মুহাম্মদ দিদারুল আলম।
প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী যুবসেনার সহ-সভাপতি ইব্রাহীম খলিল। বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক এমরানুল ইসলাম জাবেদ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন সিরাজুল ইসলাম চিশতী, মাওলানা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, শাহেদুল আলম, মুহাম্মদ মোশারফ হোসেনসহ অনেকে।
বক্তারা যুব তরুণদের যুবসেনার প্ল্যাটফরমে এসে উন্নত ক্যারিয়ার গড়ার পাশাপাশি ইসলামের মূলধারা সুন্নিয়তের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার আহ্বান জানান। তারা গাজীপুরে উগ্র সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হওয়া ছাত্রসেনা নেতা ইমাম মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
বক্তারা আরও বলেন, রাখাইনে মানবিক করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত এক ধরনের আত্মঘাতী পদক্ষেপ হবে এবং এটি ভবিষ্যতে দেশের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠতে পারে। তাই সরকারকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
তারা উল্লেখ করেন, বর্তমান সময়ের যুবসমাজ দিশেহারা ও দিকভ্রান্ত হয়ে পড়েছে। সন্তাস, উগ্রতা, মাদক, ইভটিজিংসহ বিভিন্ন সামাজিক অবক্ষয় থেকে যুব তরুণদের রক্ষা করতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। মাদকপণ্য সরবরাহ ও বিপণন রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। দেশের বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মতবিরোধ ও মত প্রকাশের নামে নিরীহ মানুষদের নানা অপবাদ দিয়ে গণপিটুনি দিয়ে মারার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা ‘মব জাস্টিস’ নামে এই কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বক্তারা।
সভাপতির বক্তব্যে আলমগীর ইসলাম বলেন, যুবসমাজের আস্থা ও ভালোবাসার ঠিকানা হিসেবে যুবসেনা কাজ করে যাচ্ছে। যুব তরুণদের মধ্যে সুন্নিয়তের দাওয়াত পৌঁছে দিতে যুবসেনা সর্বদা সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তিনি যুবসমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র্যালিতে অংশগ্রহণকারী সবাইকে এবং সহযোগিতাকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। যুবসমাবেশ উপলক্ষে ‘যুবযাত্রা’ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিবৃন্দ।
যুবসমাবেশ শেষে হাজারো যুব তরুণদের অংশগ্রহণে একটি বিশাল র্যালি নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুরাদপুরে এসে শেষ হয়।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ
