রাউজান প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের রাউজানে চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পর অজ্ঞাত আসামি করে অবশেষে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ সোমবার (৩ফেব্রুয়ারি) বিকালে নিহত ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের বড় ছেলে মাকসুদ আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল রাত ৯টার দিকে মামলা রেকর্ড হয়েছে বলে চাটগাঁ নিউজকে নিশ্চিত করেন।মামলায় অজ্ঞাত ২৫-৩০ জনকে আসামী করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ২৪ জানুয়ারি (শুক্রবার) জুমার নামাজ আদায় ও বাবা-মায়ের কবর জেয়ারতের উদ্দেশ্যে নগরীর চান্দগাঁও বাসা হতে রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিষ পাড়া গ্রামের উদ্দেশ্যে মোটরসাইকেল যোগে মাকসুদ কমিউনিটি সেন্টারের ম্যানেজার আব্বাস উদ্দিনসহ রওনা দেন। আসার পথে বাড়ির অদূরে আসাদ আলী মাতব্বর পাড়া জামে মসজিদের সন্নিকটে পৌঁছালে সশস্ত্র সন্ত্রসীরা তাদের গতিপথ রোধ করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে তারা দুইজনই গুলিবিদ্ধ হন।
সন্ত্রাসীরা চলে গেলে মুসল্লিরা তাদের উদ্ধার করে নগরীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত জাহাঙ্গীর আলম এলাকার মৃত আবু ছৈয়দ মেম্বারের ১ম ছেলে। তিনি ছিলেন নগরীর চাক্তাইয়ের একজন প্রতিষ্ঠিত শুটকি ব্যবসায়ী। নোয়াপাড়াতে তার বড় ছেলের নামে মাকসুদ কমিউনিটি সেন্টার নামে একটি পারিবারিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এদিকে ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম হত্যাকাণ্ডের পর একটি সিসিটিভি ফুটেজ সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায় ১৩ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ড শেষে বীরদর্পে হেঁটে চলে যাচ্ছে। এলাকাবাসীরা এদের অনেককে চিনে থাকলেও ভয়ে-আতঙ্কে কেউ মুখ খুলেনি।
তবে, খুনিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে এলাকাবাসী পথেরহাট বাজারে টানা দুইদিন মানববন্ধন করেন। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তদন্তে নামেন।
হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পার হয়ে গেলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। এমনকি ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করাও সম্ভব হয়নি। এতদিন নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে পরিবারের কেউ মামলাও করেনি। অবশেষে হত্যাকাণ্ডের ১০ দিনপর নিহতের বড় ছেলে বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
এই প্রসঙ্গে জানতে মামলার বাদীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তবে, নিহতের ভাই দিদারুল আলম বলেন, নিরাপত্তা জনিত কারণে আমরা এতদিন মামলা করিনি। খুনের সাথে কারা জড়িত তা পুলিশ জেনেও মামলা না করার অজুহাতে কাউকে গ্রেপ্তার করছেনা।
আজ (সোমবার) আমার বড় ভাইপো ২৫-৩০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন। আমরা আশা রাখি পুলিশ প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনবেন।
চাটগাঁ নিউজ/জয়নাল/জেএইচ