চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: স্বেচ্ছায় নয় অনুরোধের ঢেঁকি গিলতেই মূলত মণ্ডপের মঞ্চে গান করেছিলেন তারা। আর সে অনুরোধটা এসেছে পূজা উদযাপন পরিষদের এক নেতার কাছ থেকে।
নগরীর জেএম সেন হলের মণ্ডপে গান পরিবেশন করার ঘটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি পরিষ্কার করেন উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) রইছ উদ্দিন।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজনকে আটকের বিষয়ে তথ্য দিতে আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় দামপাড়া পুলিশ লাইনসে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। সেখানে এই তথ্য জানান চট্টগ্রাম নগর পুলিশের এই কমিশনার।
রইছ উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে জেএমসেন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও গোলমাল সৃষ্টির ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন মো. নুরুল ইসলাম, শহীদুল করিম।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেএমসেন হল পূজা মণ্ডপে শিল্পীদের মাধ্যমে সন্ধ্যার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঐদিন সন্ধ্যার পর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী লোকজন পূজা মণ্ডপে আসেন এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করতে থাকেন।
এরআগে পূজা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্ত চট্টগ্রাম কালচারাল একাডেমির একদল শিল্পীকে অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করার জন্য অনুরোধ করেন। তার অনুরোধের প্রেক্ষিতে ঘটনার সময় ওই শিল্পী গোষ্ঠির সদস্য শহীদুল করিম, মো. নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ ইকবাল, রনি, গোলাম মোস্তফা ও মো. মামুন পূজার অনুষ্ঠানে আসেন এবং একটি ইসলামিক গজল ও একটি বাউল গান পরিবেশ করেন।
এরমধ্যে একটি গানের ভাষায় শব্দ চয়ন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। ইতিমধ্যে অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা ২টি গান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে উপস্থিত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়াসহ উত্তেজনার সৃষ্টি করে।
এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে শহীদুল করিম ও মো. নুরুল ইসলামকে আটক করা হয়।
রইছ উদ্দিন আরও বলেন, জড়িত বাকি ব্যক্তিদেরও আটকের চেষ্টা চলছে। তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনায় কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাত লাগানোর চেষ্টা ছিল কিনা সেটিও যাচাই করা হচ্ছে।
পাশাপাশি এই ইসলামিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো পূজা উদযাপন কমিটির নেতা সজল দত্তকেও খোঁজা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত তার খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
পুলিশ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছে, শহীদুল করিম তানজিমুল উম্মাহ মাদ্রাসার শিক্ষক এবং মো. নুরুল ইসলাম, দারুল ইরফান একাডেমীর শিক্ষক। এই ঘটনায় মামলাও প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানা গেছে।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ