স্বস্তি নেই সবজির বাজারে, মাছ-মাংস-ডিমের দামও চড়া

সরোজ আহমেদ : সপ্তাহের ব্যবধানে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। সরবারহে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও বেশিরভাগ পণ্যের দাম এ সপ্তাহে ঊর্ধ্বমুখী। ফলে বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্তরা আর চাপে রয়েছেন নিম্নবিত্ত ও দরিদ্ররা।

শুক্রবার (১০ মে) নগরের বকশির হাট, রেয়াজুদ্দিন বাজার, কাজির দেউরিসহ বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁপে বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়। সেই পেঁপের দাম কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, গাজর-শসা ৭০-৮০ টাকায়, বেগুন মানভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, পটল ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ৭৫-৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রেয়াজুদ্দিন বাজারে সবজি কিনতে আসা কাঞ্চন বৈদ্য বলেন, ‘এ বাজারে অন্য সব বাজারের চেয়ে দাম একটু কম পাই, তাই আসি। কিন্তু সবজির দাম যেভাবে বাড়ছে, কিনে খাওয়াই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। সবকিছুর দাম বেড়েছে।’

এদিকে শুধু খুচরা বাজারে নয়, তীব্র তাপপ্রবাহের উত্তাপ বেড়েছে পাইকারি বাজারের পণ্যের দামেও। যার প্রভাব দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা ব্যববসায়ীদের। তারা জানান, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ঘোষণা দিলেও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় পেঁয়াজের দাম আবারও বেড়েছে। পাশাপাশি আমদানীকৃত রসুন ও আদার বুকিং রেট বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশে রসুন ও আদার দামও বাড়তির দিকে রয়েছে।

বাজারে পেঁয়াজ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকা, যা আগের চেয়ে ৫ টাকা বেশি। এছাড়া আদা-রসুন ২২০ টাকার নিচে মিলছে না।

বিক্রেতারা জানান, গরমে সবজির চাহিদা বেড়েছে কিন্তু সে অনুপাতে সরবরাহ নেই। এছাড়া সবজি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে একধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। তাই বেশির ভাগ সবজির দাম বাড়তির দিকে রয়েছে।

এক সপ্তাহ ধরে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। চলতি সপ্তাহে সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ২৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ৩৭০ থেকে ৩৮০ টাকায় উঠে যায়। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকা কেজি দরে। প্রতি ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। তবে সাদা ডিম ডজনপ্রতি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।

মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তাপপ্রবাহে মুরগি মারা যাওয়া, ডিম নষ্ট হওয়া ও সরবরাহের ঘাটতিকে দুষছেন বিক্রেতারা।

স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। গরমের উত্তাপ ছড়িয়েছে এখানেও। বেশিরভাগ চাষের ও দেশি মাছের দামই চড়া। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে।

বাজারে মাছের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বেশি। প্রতি কেজি টেংরা ৮০০ টাকা কেজি, পাবদা ৫৫০ টাকা, শিং ৫৫০ থেকে ৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা, রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতল ৩২০ টাকা, ইলিশ (৫০০ গ্রাম) ৯০০ টাকা, (৫০০ গ্রামের বেশি) ১০০০ টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১৬০০ টাকা, রুপচাঁদা ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ ক্রেতারা। চকবাজারে বাজারে সবজি কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সিহাব উদ্দিন আক্ষেপ করে বলেন, ‘মাঝে সরকারের পক্ষ থেকে দৌড়ঝাঁপ দেখলাম। এখন তারা ঠাণ্ডা। অথচ বাজার গরম হয়ে উঠেছে। দেখার কেউ নেই।’

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top