চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের অভুক্ত কুকুরের জন্য বিভিন্ন ধরনে খাদ্যপণ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছে বেসরকারি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। কুকুরের জন্য পাঠানো খাবারের তালিকায় রয়েছে ৫ হাজার ডিম, ৩ হাজার কেজি ডগফুড, মুরগির মাংস, চাল, ডাল এবং ২০০ কুকুরের চিকিৎসা সরঞ্জাম।
রোববার দুপুরে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ জেটি ঘাট দিয়ে ঢাকাস্থ সম্মিলিত প্রাণী রক্ষা পরিষদ নামে একটি সংগঠনের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল এসব সহায়তা দেয়।
প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্ব দেওয়া আব্দুল কাইয়ুম জানান, কুকুরের জন্য পাঠানো খাবারের তালিকায় রয়েছে ৫ হাজার ডিম, ৩ হাজার কেজি ডগফুড, মুরগির মাংস, চাল, ডাল এবং ২০০ কুকুরের চিকিৎসা সরঞ্জাম।
বিকেলে সেন্টমার্টিন পৌঁছে ক্ষুধার্ত কুকুরগুলোকে প্রথম দিনের মত খাবার সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দ্বীপের সব অভুক্ত কুকুরকে খাবার প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।
সেন্টমার্টিনে খাবার না পেয়ে কুকুর মারা যাচ্ছে–এমন সংবাদ পেয়ে তারা খাবার নিয়ে এসেছেন জানিয়ে আবদুল কাইয়ুম বলেন, খাবার সহায়তার পাশাপাশি ২০০ কুকুরের জন্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদিও পাঠানো হয়েছে। ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলে দুইজন চিকিৎসক ও একজন ভেটেরিনারি সহকারী রয়েছেন বলে জানান তিনি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, ‘দ্বীপে প্রায় ৪ হাজার কুকুর রয়েছে। কুকুরগুলো খাবারের জন্যে রাতদিন দ্বীপে বিচরণ করছে। অনেক সময় কচ্ছপসহ সামুদ্রিক প্রাণীও খেয়ে ফেলে। এতে দ্বীপের পরিবেশে বিনষ্ট হচ্ছে।’
প্রায় সময় দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন জানিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এ সময়ে দ্বীপে ভরপুর পর্যটক থাকে। পর্যটকদের উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে কুকুরগুলো জীবন ধারণ করে। কিন্তু সরকার সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত করার সিদ্ধান্তে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতো কুকুরগুলোও বিপাকে পড়েছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রতিদিনই দ্বীপের কোথাও না কোথাও অভুক্ত কুকুরের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এ পর্যন্ত দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় আনুমানিক শতাধিক কুকুরের মৃত্যু হয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ উল্লাহ নেজামী বলেন, ‘কুকুর নিয়ে কাজ করে সম্মিলিত একটি সংগঠনের ১১ জন সদস্যের একটি দল উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কুকুরের জন্য খাবার নিয়ে গেছেন সেন্টমার্টিনে। তারা ২০০ কুকুরের চিকিৎসা সরঞ্জামও নিয়ে গেছে। এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’
২০২২ সালে কুকুরের সংখ্যা কমাতে উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সেন্টমার্টিন থেকে দুই হাজার কুকুর টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপের গোলারচরে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই অনুযায়ী, ২০২২ সালের মার্চে সেন্টমার্টিন থেকে ৩৬টি কুকুর খাঁচায় বন্দী করে দেশের মূল ভূখণ্ডের সর্বশেষ অংশ শাহপরীরদ্বীপে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠনের বিরোধিতার মুখে কুকুর স্থানান্তরের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ