নিজস্ব প্রতিবেদকঃ এইবার চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা না দিয়েই তথ্য গোপন করে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন মো. সালাউদ্দিন নামে স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মচারী। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর একাধিকবার তাকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিলেও তিনি কোনো তোয়াক্কা করেননি।
জানা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়া ওই প্রার্থী রকেট প্রতীকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন। অথচ এ তথ্য গোপন করে মনোনয়ন ফর্ম জমা দেন তিনি। এদিকে সরকারি চাকরিজীবী হয়েও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয় জানতে রকেট প্রতীকের প্রার্থী সালাউদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি কোনো ফোন রিসিভ করেননি।
যদিও এক শতাংশ ভোটারের তথ্যে গরমিল থাকায় তার মনোনয়ন প্রথমেই বাদ পড়েছিল। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিল করলে সেখানেও বাদ পড়েন তিনি। একাধিকবার মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণার পর আদালতের রায়ে প্রার্থিতা ফিরে পান ওই প্রার্থী।
সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯ এর বিধি-২৫ অনুযায়ী সরকারি কোনো কর্মচারি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ নেই বলে উল্লেখ থাকলেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন তিনি। তাছাড়া নির্বাচনে সরকারি চাকরিজীবীদের অযোগ্যতার বিষয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-১৯৭২ এর ১২ (১) (চ) ধারার তথ্যমতে, প্রজাতন্ত্রের বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষের বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের কোনো চাকরি থেকে পদত্যাগ করেছেন বা অবসরে গেছেন এবং ওই পদত্যাগ বা অবসরে যাওয়ার পর তিন বছর অতিবাহিত না হলে তিনি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
এই বিষয়ে সীতাকুণ্ড নির্বাচন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে.এম রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা বিষয়টি অবগত আছি। বিষয়টি জানার পর কমিশনকে অবহিত করা হয়েছে। কমিশন যে ব্যবস্থা নেন আমরা সেটি বাস্তবায়ন করবো।
সংশ্লিষ্ট দফতর সূত্রমতে, গত ২৩ নভেম্বর সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘনে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এই মর্মে স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাউদ্দিনকে চিঠি দেন সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন। চিঠিতে তিন কর্ম দিবসের সময় বেঁধে দেওয়া হলেও কোনো জবাব দেননি তিনি। চিঠির জবাব না দেওয়ায় এবং ছুটি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় চলতি মাসের ১৮ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় শোকজ করা হয়। বিষয়টি আমলে না নিলে ২৪ ডিসেম্বর আবারও শোকজ করে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।