চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় আলতাফ হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার (১৯ জুন) সীতাকুণ্ড থানায় এ মামলা করেন আহত ভুক্তভোগীর স্ত্রী সুলতানা রাবেয়া।
এতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) এক সদস্যসহ ৭জনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগেগতকাল মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিকেলে সীতাকুণ্ডর ১নং সৈয়দপুর ইউনিয়নের মাষ্টার পাড়া গ্রামের ফসি হাজী জামে মসজিদের সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় আলতাফকে। ভুক্তভোগী আলতাফ একই ইউনিয়নের দক্ষিণ বগাচতর গ্রামের মাস্টার পাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার বড় ভাই সিরাজ উদ্দৌল্লাহ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হরিনা ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন।
আসামিরা হলেন, একই এলাকার নওশেদ আলম ওরফে রিপন। তিনি বিজিবির সদস্য হিসেবে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মারধর ও হয়রানি করার একাধিক অভিযোগও রয়েছে। এ ঘটনার পর রিপন এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়েছেন বলে জানা গেছে। বাকি আসামিরা হলেন মো. তারিফ হোসেন, মাহবুবুল আলম, মো. হেলাল উদ্দিন, মো. নুরুর মোস্তফা, মো. মুসলিম উদ্দিন ও রোকেয়া বেগম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবৎ ভুক্তভোগী আলতাফের সাথে রিপনের জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। আলতাফ বিষয়টি মীমাংসা করতে চাইলেও রিপন স্থানীয় কারো কথা মানতে রাজি হয়নি। উল্টো বিভিন্ন সময় আলতাফকে হুমকি দিতে থাকে। এরমধ্যে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় আলতাফ হোসেন আসরের নামাজ পড়তে যান। মসজিদ থেকে বের হওয়ার পথে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আলতাফের গতিরোধ করেন রিপন ও তার সহযোগীরা। রিপন প্রথমে কিরিচ দিয়ে আলতাফকে কুপিয়ে জখম করে। পরে রিপনের সাথে আরও কয়েকজন লোহার রড, হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে মারধর শুরু করে। স্বামীকে বাঁচাতে স্ত্রী রাবেয়া ছুটে আসলে তাকেও শ্লীলতাহানির চেষ্টা ও এলোপাতাড়ি মারধর করে আসামিরা। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা চলে যায়। যাওয়ার সময় এ ঘটনায় কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে হত্যার হুমকি দিয়ে যায় আলতাফের স্ত্রী রাবেয়াকে। পরে আহতাবস্থায় আলতাফকে প্রথমে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণের কারণে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখান থেকে তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে অপারেশন করা হলেও এখনও শঙ্কা মুক্ত নয় আলতাফ।
আলতাফের ভাতিজা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিরুল ইসলাম জনি বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আমার চাচাকে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। হাসপাতালে এখনও মৃত্যু সাথে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি চায়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি তদন্ত মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, সাতজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস