চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: সিলেটে গ্যাসক্ষেত্রের ১০ নম্বর কূপে (অনুসন্ধান কূপ) গ্যাসের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের সন্ধান পাওয়া গেছে। এখান থেকে দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ ব্যারেল হারে তেল পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
রবিবার (১০ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ ঘোষণা দেন। এসময় বিজয়ের মাসে এটা সবার জন্য ‘বিরাট সুখবর’ বলেও উল্লেখ করে তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী জানান, সিলেট-১০ নম্বর গ্যাসকূপে ২ হাজার ৫৭৬ মিটার গভীরতায় খনন সম্পন্ন হয়েছে। কূপটিতে তিনটি স্তরে গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এরমধ্যে সবচেয়ে নিচের স্তরটি ২ হাজার ৫৪০ থেকে ২ হাজার ৫৫০ মিটার পর্যন্ত পরীক্ষা করে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রবাহ পাওয়া গেছে; যার ফ্লোয়িং প্রেসার ৩ হাজার ২৫০ পিএসআই। গ্যাসের মজুদের পরিমাণ ৪৩ থেকে ১০০ বিলিয়ন ঘনফুট।
এছাড়াও ২ হাজার ৪৬০ থেকে ২ হাজার ৪৭৫ মিটার গভীরে আরও একটি ভালো গ্যাস স্তর পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখানে পরীক্ষা করলে ২৫ থেকে ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে আমরা আশা করছি। আর ২ হাজার ২৯০ থেকে ২ হাজার ৩১০ মিটার গভীরেও গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
গ্যাস ছাড়াও উপরের দিকে ১ হাজার ৩৯৭ থেকে ১ হাজার ৪৪৫ মিটার গভীরতায় আরও একটি জোন পাওয়া গেছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, যেখানে গত শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) পরীক্ষা করে তেলের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যার প্রাথমিকভাবে এপিআই গ্রাভিটি ২৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি। সেলফ প্রেসারে প্রতি ঘণ্টায় ৩৫ ব্যারেল তেলের প্রবাহ পাওয়া যাচ্ছে। পরীক্ষা সম্পন্ন হলে মোট তেলের মজুদ জানা যাবে।
একযোগে উৎপাদন করা হলে এই কূপটি প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর সাসটেইন করবে উল্লেখ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গড় ভারিত মূল্য হিসেবে এর মূল্য প্রায় ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যদি ২০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে উৎপাদন করা হয়, তাহলে কূপটি ১৫ বছরেরও বেশি সময় সাসটেইন করবে।’
প্রথম দিনে দুই ঘণ্টায় ৭০ ব্যারেলের মতো তেল উত্তোলন করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তেল উত্তোলন আমরা আপাতত বন্ধ রেখেছি। এটা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে, মোট মজুদের পরিমাণটা আমরা জানতে পারবো। পুরো বিষয়টির বিস্তারিত জানতে আরও চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগবে।
এই কূপে গ্যাস ও তেলের স্তর ভিন্ন উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বলেন, ‘এখানে একটি ভালো দিক হলো গ্যাস ও তেলের স্তর ভিন্ন। আগে আমরা গ্যাসের সঙ্গে কিছুটা তেল আসতো। যেটা আমরা কনডেসার হিসেবে ব্যবহার করতাম। এখন তেলটা ভিন্ন স্তর হওয়ায় সেটা আরও ভালো হবে।’