আনোয়ারা প্রতিনিধি : নানা নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নির্বাচন থেকে মাঝ পথে সরে দাঁড়ালেন আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ মান্নান চৌধুরী।
বেশ কয়েকদিন ধরে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার গুঞ্জন অবশেষে সত্যি হলো। ভোটগ্রহণের ৮ দিন আগে চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের সমর্থিত প্রার্থী হঠাৎ নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায় নানা আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
অনেকে বলছেন, নির্বাচনের মাঠে ভোটারদের সাড়া না পাওয়ায় আগেভাগে সরে গেছেন মান্নান। আবার কেউ কেউ বলছেন, প্রতিপক্ষের প্রার্থীর জয় ঠেকাতে বর্তমান চেয়ারম্যান তৌহিদুল হককে সমর্থন দিয়ে সরে গেছেন তিনি। আবার এমন প্রশ্নও ঘোরপাক খাচ্ছে, এতদিন মান্নানের সমর্থক নেতাকর্মীরা তৌহিদুল হককে নিয়ে নানা কটুক্তি করে আসছিল। আবার তারাই তৌহিদের পক্ষে কাজ করবে তো?
মঙ্গলবার (২১ মে) রাতে চট্টগ্রাম নগরের সার্সন রোডস্থ সাবেক মন্ত্রীর বাসভবনে সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করেন। এতে সাংসদ জাবেদের উপস্থিতিতে এম এ মান্নান চৌধুরী ও তৌহিদুল হক চৌধুরীকে নিয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে মান্নানকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিয়ে তৌহিদকে সমর্থন দেন। এসময় তৌহিদের পক্ষে নির্বাচন করার জন্য নেতাকর্মীদের নির্দেশও দেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
এখন এম এ মান্নান নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে যাওয়ায় লড়াই হবে দ্বিমুখী। তবে এই নির্বাচন সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি পরিবারের অস্তিত্বের লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ লড়াইয়ে জিততে মরিয়া হয়ে ওঠেছে দুই পরিবারের অনুসারীরা। ধারণা করা হচ্ছে, মূলত বর্তমান চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীর জনপ্রিয়তা থাকায় শক্তি হিসেবে তাকে সমর্থন দিয়ে কম জনপ্রিয় মান্নানকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ১ মে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এম এ মান্নান চৌধুরীকে সমর্থন দেন। এতে সাংসদ জাবেদের একক প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচনে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। এর আগে নির্বাচনে অংশ নিতে বটতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। অন্যদিকে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপির সমর্থন নিয়ে প্রার্থী হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক। এছাড়া বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীও কয়েকজন স্থানীয় নেতাকর্মীসহ জনগণের সমর্থনে নির্বাচনে প্রার্থী হন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান প্রার্থী এম এ মান্নান চৌধুরী জানান, নেতার নির্দেশ পালন করেছি। মন্ত্রী মহোদয়ের সমর্থন ছিল তাই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এখন মন্ত্রী মহোদয় ভাল মনে করেছে তাই আমাকে সরে যেতে বলেছে। নেতার নির্দেশ পালন করে আমি সরে গিয়েছি। আমি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু এমপির পিছনে হেঁটে রাজনীতি শিখেছি।
আনোয়ারা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জিয়া উদ্দীন বলেন, কাজী মোজাম্মেল হকের (আনারস) বিজয়ের প্রথম ধাপ অর্জিত। এখন চুড়ান্ত বিজয়ের অপেক্ষা।
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক জানান, আনোয়ারার রাজনীতিকে তারা নাট্যমঞ্চ বানিয়ে ফেলেছে। তারা যেমন অভিনয় করে জনগণও তা দেখে। কিন্তু জনগণ এখন এগুলো দেখে হাসে। যতই কিছু করুক বিজয় আমাদের হবে। ফিরিয়ে আনব আনোয়ারার শান্তি।
চাটগাঁ নিউজ/সাজ্জাদ/এসএ