আনোয়ারা প্রতিনিধি : সাবেক ভূমিমন্ত্রীর আলোচিত সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) রিদুওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েমসহ আটজনের বিরুদ্ধে মারামারির অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলাটি চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আনোয়ারা উপজেলার বিলপুর গ্রামের বাসিন্দা মনতোষ আইচের ছেলে কাকন আইচ (২৩) বাদী হয়ে গত ২৬ জুন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে এ মামলা করেন। যার সিআর মামলা নং-২৮৪/২৪ (কর্ণফুলী)।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন-রিদুওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েম (৩৬), শওকত ওসমান (৪২), জসিম উদ্দিন (৪৫), রিদুয়ানুল হক রহিম (৪৪), আলমগীর চৌধুরী (৬২), জসিম উদ্দিন চৌধুরী (৫৫), এম কাইয়ুম শাহ (৫০) ও এমএ মান্নান চৌধুরী (৬২)। অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জন। এরা সকলে আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর, গুয়াপঞ্চক, খোট্টাপাড়া, শিলাইগড়া, তৈলারদ্বীপ, বরুমছড়া, পারকি দুধকুমড়া ও ওয়াপদাপাড়ার এলাকার বাসিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী অসীম শর্মা।
এ বিষয়ে পিবিআইয়ের রিসোর্স অফিসার (আরও) ফারুক হোসাইন রিফাত বলেন, ‘শনিবার (৬ জুলাই) মামলাটি চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অফিসে পৌঁছেছে। তদন্তের জন্য একজন অফিসারকে নিয়োগ দিয়েছেন।’
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, গত ৭ জুন বিকেল ৪টায় কর্ণফুলী উপজেলাধীন বন্দর সেন্টার নামক কস্তুরী হোটেলের সামনে ঐতিহাসিক ৭ জুন ৬ দফা দিবস ও বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল সমাবেশ করলে ৮ নং আসামির নির্দেশে ও ১-৩ আসামিদের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাদীসহ সকলের উপর অতর্কিত হামলা করে।
এতে বাদীকে মারধর করে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তাক্ত জখম করেন। একই সময়ে ভিকটিম মো. জামশেদ ও এরশাদ নামক দুই যুবক বাদীকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসলে তাঁদেরকেও ৫ নং আসামি লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন বলে অভিযোগ তোলেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, উপস্থিত লোকজন বাদীকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসলে সকল আসামি ও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জন লোক আনোয়ারা উপজেলা তৃণমূল আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের এলোপাতাড়ি মারধর করেন। তান্ডবলীলা চালানোর পর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে তারা পালিয়ে যান। পরে বাদীসহ আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ৬টি সেলাই দিতে হয় বাদীকে। পরে বাদীর অবস্থা গুরুতর হলে চমেক মেডিকেলের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
মামলার বাদী কাকন আইচ জানান, সাবেক মন্ত্রীর পিএসের নেতৃত্বে আনোয়ারায় বিভিন্ন অপকর্ম ও তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও হয়রানি করে আসছে তার বাহিনীরা। যার মধ্যে উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রয়েছে। সেদিন আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করেন তারা। আমাকে যারা বাঁচাতে আসছে তাদেরকেও হামলা করেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সঠিক বিচারের জন্য প্রার্থনা করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার আসামি ভূমিমন্ত্রীর সাবেক এপিএস রিদওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েম জানান, ঘটনার দিন ওই স্থানে আমি ছিলাম না। কিভাবে আমার নেতৃত্বে ঘটনাটি হবে। এটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র। আমার মানসম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য কিছু ব্যক্তি উঠে পড়ে লেগেছে।
বাদীর আইনজীবী অসীম শর্মা জানান, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ১৪৩-১৪৮, ৩২৩-৩২৬, ৩০৭, ৪২৭, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ এনে মামলা করা হয়েছে। পরে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে পরবর্তী ৩১ জুলাই মামলার প্রতিবেদন প্রার্থীর তারিখ নির্ধারণ করেছেন।’
চাটগাঁ নিউজ/সাজ্জাদ/এসএ