নিজস্ব প্রতিবেদক: শহীদের রক্ত ও নির্যাতিত ভাইদের আত্মত্যাগ এদেশের ইসলামী আন্দোলনের বিজয় নিশ্চিত করবে। জেল, জুলুম ও নির্যাতন করে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা স্তব্ধ করা যাবেনা। ইসলামী আন্দোলনের ভাইরা আগামীদিনে যে কোন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ইসলামের পক্ষে বিজয় নিশ্চিত করতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করবে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত, পঙ্গু ও কারা নির্যাতিত ভাইদের সম্মানে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে কর্ণফুলী ক্রসিং এর এস.আর স্কয়ার কমিউনিটি হলে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন হয়।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আমীর আনোয়ারুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর সাবেক এমপি আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মজরিসে শুরা সদস্য ও চট্টগ্রাম অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক জাফর সাদেক।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, মজলুমদের উপর যত বেশি জুলুম করে তারা তত বেশি অধঃপতন হয়। তেমনি ফ্যাসিবাদী ও জুলুমবাজ সরকার হাসিনাও সারা দুনিয়ার কাছে কলঙ্কিত হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। হাসিনার এই দেশত্যাগ মূলত শহীদ ও পঙ্গুদের রক্তের বিনিময়ে সম্ভব হয়েছে। মূলতঃ শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ আজ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চট্টলার মানুষ সারা বাংলার মানুষের কাছে প্রেরণা তৈরি করেছে। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা বাংলাদেশের মাটিতে ইসলামের শত্রুদের হাতে চেড়ে দিতে পারেনা। শহীদেরা কখনো মৃত্যুবরণ করেনা, তারা বার বার দুনিয়ায় এসে ইসলামের জন্য প্রাণ দিতে আহাজারি করে। আমরা প্রতিশোধ গ্রহণ করতে চায় না। আমরা বাংলাদেশকে ইসরামের বাংলাদেশ হিসেবে গঠন করার মধ্যমেই প্রতিশোধ নেয়া হবে। ইসলামী আন্দোরনের মর্যাদাকে সমুন্নত করার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নগর আমীর আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী বলেন, শহীদ ভাইদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বলছি আল্লাহ ছাত্রজনতার মাধ্যমে আপনাদের রক্তের বদলা দিয়েছেন। ফ্যাসিবাদী সরকার অনেক চেষ্টা করার পরও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার ইসলামী আন্দোলনকে দমাতে পারে নি। ভবিষ্যতেও পারবে না, ইনশাআল্লাহ। ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে আজও যারা ষড়যন্ত্র করার চিন্তা করেছেন, তাদের আর ছাড় দেয়া হবেনা। লুন্ঠতরাজ শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। অথচ তারা ১০ টাকায় চাউল খাওয়াবে বলে মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে। এ কাজ জামায়াত ছাড়া কেউ আদায় করতে পারবে না। জামায়াতে ইসলামী ছাড়া সবাই দুর্নীতি আর চাঁদাবাজি করার পরিকল্পনা করে ক্ষমতায় যেতে চায়। তাই আজকের কোটি কোটি জনতা জামায়াতে ইসলামীকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক জেলা আমীর অধ্যাপক জাফর সাদেক বলেন, শহীদেরা জীবিত। শহীদদের মৃত্যু হয়না। আজ শহীদদের রেখে যাওয়া কাজ বাস্তবায়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আঞ্জাম দিতে হবে। এ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা অতীতেও কর্মীদের ত্যাগের বিনিময়ে ভূমিকা রেখেছিল। ভবিষ্যতেও আরো উর্বর থেকে উর্বরতর হবে ইনশাআল্লাহ।
সভাপতির বক্তব্যে আনোয়ারুল আলম চৌধুরী বলেন, নির্যাতিত ভাইদের ত্যাগের জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করবো যেন আপনাদের দুনিয়া ও আখেরাতকে আল্লাহ এ ত্যাগের বিনিময়ে উত্তম জাযাহ দান করেন। শহীদদের ত্যাগ আজীবন ধরে রাখার চেষ্টা করতে ইসলামী আন্দোলনকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
জেলা সেক্রেটারী অধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল হকের সঞ্চারনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী মুহাম্মদ জাকারিয়া, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মোহাম্মদ নাছের, ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম পশ্চিম জেলা সভাপতি ছাত্রনেতা আইয়ুবুল ইসলাম, লোহাগাড়া উপজেলা আমীর অধ্যাপক আসাদ উল্লাহ ইসলামাবাদী, বাঁশখালী উপজেলা আমীর ইঞ্জিনিয়ার শহীদুল মোস্তফা, সাতকানিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা কামাল উদ্দিন, কালারপুল সাংগঠনিক থানা আমীর মাস্টার নাছির উদ্দীন, সাংগু থানার আমীর ডাঃ আব্দুল জলিল, কর্ণফুলী উপজেলা আমীর মাস্টার মনির আবছার, সাতকানিয়া পৌরসভা আমীর মুহাম্মদ ওয়াজেদ আলী, শহীদ সালাউদ্দিন এর বড় ভাই মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহিয়া, আন্দোলনে আহত কামাল উদ্দিন প্রমুখ।
চাটগাঁ নিউজ/টিপু/জেএইচ