হাটহাজারী প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদা আলম বদলি হয়েও নিজ দখলে রেখেছেন মহিলা হোস্টেলের সরকারি বাসা। বছর পেরোলেও দেননি ভাড়ার টাকা। ফলে, রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে হাটহাজারী উপজেলায় ‘ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা’ পদে সাইদা আলম যোগদানের পর থেকেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে চরম দুর্নীতি ও শিক্ষা অফিসকে বাণিজ্যের আখড়ায় পরিণত করেছেন। গতবছর (২২ ফেব্রুয়ারি) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন-১) আবদুল আলিম বদলির আদেশ দেন এবং ২৭শে ফেব্রুয়ারির মধ্যে বদলিকৃত শিক্ষা কর্মকর্তাকে তাঁর কর্মস্থলের দায়িত্বভার হস্তান্তর করতে বলা হয়েছিল। অন্যথায়, ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত (স্ট্যান্ড রিলিজ) হিসেবে গণ্য হবেন বলে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করে শিক্ষা অধিদপ্তর।
এদিকে, বিভিন্ন দপ্তরে তদবিরের মাধ্যমে পাঁচদিন পর গেলো ২ মার্চ অদৃশ্য ক্ষমতাবলে বদলিকৃত আদেশ ঠেকিয়ে স্বপদে পুনর্বহালে উপজেলায় নানা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়। একইভাবে কয়েকবার বদলি ঠেকিয়ে হাটহাজারীতে বহাল তবিয়তে থেকে যান।
অনুসন্ধান বলছে,তিনি উপজেলা প্রমোট মহিলা হোস্টেলে থাকলেও ওই সময় ১৮ মাস সরকারি বাসা ভাড়া পরিশোধ করেননি। বকেয়া ভাড়া নিয়ে সাবেক ইউএনও’র চিঠিতেও মেলেনি কোন প্রতিকার। পরে গতবছর আগস্ট মাসে ব্যাংকিং চালানের মাধ্যমে ওই টাকা পরিশোধ করেন।
গত চার মাস পূর্বে হাটহাজারী থেকে বদলি হলেও দখলে রেখেছেন মহিলা হোস্টেলের সরকারি বাসা। মাঝেমধ্যে তিনি ওই বাসায় থাকেন। এক বছর ধরে পরিশোধ করেন না বাসা ভাড়া।
মহিলা হোস্টেলে থাকা ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রজেক্টের কর্মকর্তা চিন্ময়ী দেওয়ান সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি সংবাদ কর্মীর পরিচয় পেয়ে দ্রুত ব্যস্ত আছো বলে কল কেটে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা বলেন,এদিকে বাসা বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য কর্মকর্তাও বঞ্চিত হচ্ছেন। সব মিলিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে উপজেলার কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে। বদলি হওয়ার পরে বাসা দখলে রাখা সরকারের কোন বিধানে নেই।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইদা আলমকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল ধরেননি।
এ দিকেও উপজেলার সব হিসাব-নিকাশ যার কাছে পাওয়া যায় সেই উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. একরাম উদ্দিন বলেন,আমি উপজেলার কেউ না,আমি এই হিসাব নিকাশ গুলো রাখি না,এগুলো ব্যাংকে লেনদেন হয় এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানিনা।
মহিলা হোস্টেল প্রমোট বাসা বরাদ্দ কমিটির সভাপতি ও হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবিএম মশিউজ্জামান মুঠো ফোনে বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। যদি কোন অনিয়ম দুর্নীতি হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।