সিপ্লাস ডেস্ক: রাজশাহীর গোদাগাড়ীর দিয়াড় মানিকচক সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে এক কিশোর (১৫) নিহত হয়েছে। তার নাম সমিরুল হক। সে গোদাগাড়ী উপজেলার চরআষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের বারীনগর গ্রামের হাসিবুল হকের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিএসএফ জওয়ানরা সমিরুল হককে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। গুলি তার ডান বগল দিয়ে ঢুকে বাম বগল ছেদ করে বেরিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পুলিশ কিশোর সমিরুলের মরদেহ উদ্ধার করেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বিজিবির ৫৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল নাহিদ হোসেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পতাকা বৈঠক আহ্বান করেছে বিজিবি।
গোদাগাড়ীর ৯ নম্বর চরআষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল হক ভোলা জানান, সীমান্তে বাংলাদেশ ও ভারতের কৃষকদের ফসলের ক্ষেত রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সমিরুলসহ কয়েকজন মিলে দয়াড় মানিকচক সীমান্তের ৫ নম্বর পিলার এলাকার জিরোলাইন থেকে ১৫০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে ঘাস কাটছিল। এসময় ভারতের চরআষাড়িয়াদহ বিএসএফের একটি টহল দল তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলিটি সমিরুলের এক বগল দিয়ে ঢুকে অন্য বগল দিয়ে বেরিয়ে যায়। ফলে ঘটনাস্থলে সে মারা যায়। অন্যরা পালিয়ে প্রাণ রক্ষা করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই বিএসএফ আগ্রাসী ভূমিকায়। সীমান্তের কাঁটাতারের কাছে কাউকে যেতে দেখলেই গুলি করে তারা। সমিরুলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। অথচ সীমান্তের কাছাকাছি দু’দেশের বাসিন্দাদেরই ফসল আছে। ভারতীয় ঠিকই কাজকর্ম করে যাচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশিরা কৃষিকাজে গেলেই তারা জুলুম করছে।’
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম জানান, কিশোর সমিরুলের মরদেহ বিজিবি উদ্ধার করেছে বলে তিনি খবর পেয়েছেন। আইন অনুযায়ী মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে গত ২২ মে আষাড়িয়াদহ সীমান্তে ঘাস কাটতে গেলে আবু ওবায়েদ নামের এক কিশোরকে গুলি করে বিএসএফ। গুলিটি তার উরুর মাংস ভেদ করে বেরিয়ে যায়। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপারেশনের পর সে সুস্থ হয়ে ওঠে।
আবু ওবায়েদের বাবা গোলাম রসুল জানিয়েছিলেন, সীমান্তের কাছে নিজের বোরো ক্ষেতের পাশে ঘাস কাটছিল ওবায়েদ। এসময় বিএসএফের এক জওয়ান এসে তাকে ফিরে যেতে বলেন। ওবায়েদ ঘাসগুলো বস্তায় ভরে মাথায় তুলে যখন ফিরে আসছিল, সেই সময় হঠাৎ তার পায়ে গুলি করে।