রাঙামাটি প্রতিনিধি: দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হু হু করে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে চললেও পার্বত্য রাঙামাটি জেলায় এখনো পর্যন্ত ডেঙ্গু পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। এদিকে রাঙামাটির স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, মূলতঃ যাত্রীবাহি বাসগুলোর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকেই রাঙামাটিতে প্রবেশ করছে ডেঙ্গুবাহি এডিশ মশা। আর এতেই আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। তবে সেটি এখনো পর্যন্ত উদ্যোগজনক নয় বলে মন্তব্য করেছেন রাঙামাটির সিভিল সার্জন।
জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের সময়োপযোগী নানামুখী সচেতনতামূলক উদ্যোগ ও স্থানীয় জনসাধারণের সচেতনতার ফলেই এমনটি সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির সিভিল সার্জন ও রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ নীহার রঞ্জন নন্দী।
সিভিল সার্জন জানিয়েছেন, চলতি ডেঙ্গু মৌসুম শুরুর পর থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত মাত্র ১৭৫ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ভর্তি সকল রোগিকেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলা হয়েছে কোনো ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে মাত্র দুই জন ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসারত আছে জানিয়ে সিভিল সার্জন জানান, রাঙামাটির স্বাস্থ্য বিভাগে পর্যাপ্ত পরিমানে ঔষধ সামগ্রী মজুদ রয়েছে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে চিকিৎসকদের সার্বক্ষনিক তদারকির মধ্যে রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও মাত্র ৫০ টাকার বিনিময়ে রাঙামাটিতে ডেঙ্গু রোগীদের পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ন্যাশনাল গাইড লাইন অনুসারে রাঙামাটির স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক জেলার প্রত্যেকটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালু রয়েছে। এরপরও ডেঙ্গু রোগ নিয়ে প্রায় প্রতিদিনই রাঙামাটিতে জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে যাতে করে স্থানীয় বাসিন্দারা মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে হলে করনীয় সম্পর্কে সচেতন হয়।
সিভিল সার্জন জানান, রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল ও জুড়াছড়ি এই চারটি উপজেলা ভারত সীমান্তভর্তি হওয়ায় এবং এই উপজেলাগুলো অত্যন্ত দূর্গম অঞ্চলে হওয়ায় এসব উপজেলাগুলোতে প্রতিদিনই আমরা নিয়মিত নজরদারি বজায় রেখেছি।
এদিকে, স্বাস্থ্য বিভাগের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, রাঙামাটিতে চলতি মৌসুমে এখনো পর্যন্ত ১৭৫ জন রোগী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছে ১৭৩জন। সূত্রটির দাবি, রাঙামাটিতে ডেঙ্গুরোগে আক্রান্তদের মাঝে অধিকাংশই শহরাঞ্চলের বাসিন্দা। আর রাঙামাটি থেকে চলাচলকারি বাসগুলোর মাধ্যমেই ডেঙ্গুবাহি এডিশ মশা অত্রাঞ্চলে প্রবেশ করছে। আর এতেই আক্রান্ত হচ্ছে এখানকার বাসিন্দারা। বাসগুলোতে মশানিধন ঔষধ ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করতে পারলে ডেঙ্গু রোগ বিস্তার ঠেকানো অনেকটাই সম্ভব বলেও মন্তব্য করেছে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা।