নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের রাউজানের আজিজ বাহিনীর প্রধান শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক ওরফে আজিজ্যাকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৭। আজিজের বিরুদ্ধে হত্যা, অপরণসহ ১২টির অধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
রবিবার (২৪ নভেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম নগরী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র্যাব-৭।
জানা যায়, গ্রেপ্তার শীর্ষ সন্ত্রাসী আজিজুল হক বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র আইন, অপহরণ, ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এরমধ্যে ২০০২ সালের ১১ এপ্রিল রাউজানের হিংগলায় বৌদ্ধ আনাত আশ্রমের পরিচালক জ্ঞান জ্যোতি ভিক্ষুককে নির্মাণভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়। যে কারণে তখনকার সময় চীন জাপানের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
এছাড়াও রাউজানের ডাবুয়ায় দুই সহোদর স্কুল ছাত্র টিটু ও বিটুকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যার সঙ্গে জড়িত আজিজুল হক ওরফে সন্ত্রাসী আজিজ্যা। সে পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের তৎকালীন চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন রাজু, জাহাঙ্গীর আলম মেম্বার, ইদ্রিস মাস্টার, এমদাদ, মো. মিয়া, নাসিম, মহরম, রফিক, কৃষ্ণ দত্ত, ইকবাল হোসেন গিয়াস উদ্দিন জামিল সোহেল, রিটন, ফারুক হত্যাসহ এলাকায় আরও অসংখ্য হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত।
সূত্র আরও জানায়, ২০০৩ সালে ১৫ জুন গহিরা ব্রিক ফিল্ড রাস্তার মাথায় একটি দোকানে বসা অবস্থায় গহীরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল হককে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে আজিজ। তখন মারাত্মক আহত সিরাজুল হককে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে পরে তার পা দুটি কেটে ফেলা হয়। একপর্যায়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
২০০৪ সালের রাউজানের ডাবুয়া রাবার বাগান এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। অনেকদিন কারাগারে থাকার পর প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহলের ছাত্র ছায়ায় আবার বের হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ে। বর্তমান রাউজান থানার অস্ত্র লুট করে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে। বিশেষ করে প্রবাসীদের টার্গেট করে চাঁদাবাজি করে আসছিল সন্ত্রাসী আজিজ।
অভিযোগ রয়েছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে আজিজুল হকের নেতৃত্বে প্রায় ২০-২৫টি মোটর সাইকেল যোগে অজ্ঞাতনামা ৫০-৬০ জন বেআইনিভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র লাটিসোটা নিয়ে রাউজানের চিকদাইর ইউনিয়নের দক্ষিণ সর্তায় ইয়াছিন চৌধুরীর (সিআইপি) বসত বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে তার ঘরে প্রবেশ করে ইয়াছিন চৌধুরী ও তার চাচাতো ভাই তৌহিদ চৌধুরীর উভয়ের বাড়িতে লুটপাট চালায়। এসময় ঘরে থাকা টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় এবং যাবার সময় একটি প্রাইভেট কার ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে ইয়াছিন চৌধুরী সিআইপি চাটগাঁ নিউজকে বলেন, সন্ত্রাসী আজিজের চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে রাউজানের মানুষ অতিষ্ঠ। এমন কোনো ঘর বা ব্যক্তি নেই তার চাঁদাবাজীর শিকার হয়নি। গত ৩০ সেপ্টেম্বর এই আজিজের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল যোগে ৫০-৬০ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আমার বাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ ভাঙচুর চালিয়েছে। জেনেছি, তার কাছে যত অস্ত্র রয়েছে সব ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে থানা থেকে লুট করা হয়েছে। অবশেষে সন্ত্রাসী আজিজুল হককে গ্রেপ্তার করে রাউজানবাসীকে স্বস্তি প্রদানের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ