গাজী জয়নাল আবেদীন : চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়ায় মধ্যরাতে গুলিবর্ষণের ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর আগে শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে গুলিবর্ষনের ঘটনায় আহত মহিউদ্দিনের ভাই মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৫-৭ জনকে আসামী করে দ্রুত বিচার আইনে এই মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ অভিযান চলিয়ে ঘটনায় জড়িত ৫ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও ঘটনার মূল আসামি পালিয়ে যায়। এইসময় তাদের কাছ থেকে ২টি হাসুয়া, ২ টি কিরিচসম মোট ৪টি দেশীয় ধারালো অস্ত্র, একটি এস.এস. পাইপ, ও ৩ টি মোটরসাইকেল (১টি গ্লামার, ১টি এভেঞ্জার, ১ টি পালসার) উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন— মো. রুবেল (৩১), মো. জুয়েল(২৩), মো. আব্দুল (২০), মো. কামাল (৫০) ও মো. বাবলু (২৮)। তাদের শনিবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয় বলে জানান রাউজান থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মো. আলমগীর।
এ মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন— চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক জানে আলম, যুবলীগ নেতা আরাফাত মামুন, খোকন প্রকাশ বাইট্টা খোকন, মো. ফরিদ, মো. তৈয়ব, মেহরাজ, আলমগীর প্রকাশ টেম্পু আলমগীর, জসিম, শাকিল, এন এ বাবুল, আকবর, সোহেল, সাইফুল, নাছির প্রকাশ গুটি নাছির, মো. মানিক, নঈমুল, সুমন, রানা ও মহিউদ্দিন।
এদিকে গত শুক্রবার দিনব্যাপী পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পর নোয়াপাড়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিরামিষ পাড়া খায়েজ আহমেদ চেয়ারম্যান বাড়ির আশেপাশে রাত সাড়ে ৮ টা হতে আড়াইটা পর্যন্ত প্রায় ৬০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ হয়েছে বলে দাবি করেন খায়েজ আহমেদের ছেলে কামাল উদ্দিন। ফলে এখনও আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন নোয়াপাড়ার বাসিন্দারা।
এই বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মামুন ভুঁইয়া বলেন, শুক্রবার রাতেও গোলাগুলির হওয়ার খবর শুনেছি। তবে, কত রাউন্ড গুলিবর্ষণ হয়েছে তা তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়। তিনি আরো বলেন, এই ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আসামিদের আটক করতে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নোয়াপাড়ার পাশাপাশি সমগ্র রাউজান জুড়ে অভিযান চলমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর হতে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ রাউজানের নোয়াপাড়া, উরকিরচর, বাগোয়ানে একাধিক হামলা, মারামারি, গোলাগুলি, কোপাকুপি, অপহরণ, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ একাধিক ঘটনা ঘটেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১০ টার দিকে সন্ত্রাসী কর্তৃক গ্রামবাসীর উপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় ১১ জন গ্রামবাসী গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদের অনেকেই এখনও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
আহতদের কেউ সাধারণ মানুষ, কেউ প্রবাসী, কেউবা টেকনিশিয়ান আবার কেউ কেউ শ্রমজীবি বলে জানা গেছে। রাজনীতির সাথে তাদের নূন্যতম সম্পর্ক
নেই বলে জানান এলাকাবাসী। একই এলাকায় প্রতিবার এমন সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনায় আতঙ্কের জনপদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে রাউজান। ফলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন রাউজানবাসী। সহসা এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ করতে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি সরকারেরও সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ