সিপ্লাস ডেস্ক: চলতি বছর তিন বিজ্ঞানী রসায়নে নোবেল পেয়েছেন। তাঁরা ফরাসী মঙ্গুই বায়েন্ডি, মার্কিন লুই ব্রাস ও মার্কিন-রুশ বিজ্ঞানী অ্যালেক্সাই ইয়াকিমভ। ন্যানোটেকনোলজির মৌলিক গবেষণার জন্য তারা নোবেল পেয়েছেন।
বুধবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে সুইডিশ নোবেল একাডেমি এই তিন বিজ্ঞানীর নাম ঘোষণা করে।
কি কারনে তাঁরা নোবেল পেলেন?
কারণ, তাঁরা আবিষ্কার করেছিলেন কোয়ান্টাম ডট। ন্যানোপার্টিকেলগুলি এত ছোট, সেগুলোর বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করার জন্য নতুন কিছু দরকার ছিল। তিন বিজ্ঞানির উদ্ভাবিত কোয়ান্টাম ডট অতিক্ষুদ্র ন্যানোপার্টিকেলের বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করতে পারে। এর ফলেই জোয়ার আসে ন্যানোটেকনোলজিতে।
আজকের এলইডি টিভি, এলইডি বাতিতে এই তিন বিজ্ঞানীর আবিষ্কারের পরোক্ষ ছোঁয়া রয়েছে। এমনকি টিউমারের টিস্যু অপারেশনের সময় সার্জন-চিকিৎসকদের গাইড হিসেবে ভূমিকা রাখে ন্যানোটেকনোজির সেই মৌলিক আবিষ্কার।
যেকোনো বস্তুর গতিপ্রকৃতি নিউটনীয় গতিবিদ্যা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। সে বস্তু যদি খুব ছোটও হয়, তবুও।
কিন্তু যখন কোনো বস্তু অতি ক্ষুদ্র হয়, তাদের পরিমাপ করার জন্য ন্যানোস্কেল ব্যবহার করার দরকার হয়, তখন সেই সব বস্তু বা কণাকে আর নিউটনীয় গতিবিদ্যা ব্যাখ্যা করা যায় না। সে সব বস্তুদের আচার-আচরণ ব্যাখ্যা করতে দরকার হয় কোয়ান্টাম বলবিদ্যার। এত ক্ষুদ্র কণাদের জগতে যে প্রযুক্তির ব্যবহার রয়েছে, তাকেই বলে ন্যানোটেকনোলজি। এই টেকনোলোজির উৎকর্ষ সাধনে বাওয়েন্ডি, ব্রাস ও একিমভ বড় ভূমিকা রেখেছেন। তারাই প্রথম খুব এত ছোট কণা বা ক্ষুদ্র বস্তু তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন, যাদের আচারণ, বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সাহায্যে ব্যাখ্যা করা যায়।
আর সেই খুদে বস্তুদের বলা হয় কোয়ান্টাম ডট।
বহু আগে থেকেই পদার্থবিদেরা জানতেন, ন্যানোপার্টিকেলে কোয়ান্টাম প্রভাব দেখা দিতে পারে। কিন্তু সে সময় ন্যানোস্কেলের কোনো স্পষ্ট চিত্র বিজ্ঞানীদের কাছে ছিল না। তাই, বেশিরভাগই গবেষকেরাই মনে করতেন, ন্যানোস্কেলের কোয়ান্টাম প্রভাবের ব্যবহারিক প্রয়োগ অসম্ভব। কিন্তু আজকের প্রযুক্তিদুনিয়া দাঁড়িয়েই আছে ন্যানোটেকনোলজির ওপর। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে বড় ভূমিকা রেখেছে এই তিন নোবেলজয়ীদের গবেষণা।
নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীরা নোবেল পদকের পাশাপাশি একটি সনদপত্র, মোট ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনা বা ১১ কোটি ১৩ লাখ টাকা পাবেন।