চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: তারল্য সংকটে পড়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোর একেবারে মরি মরি অবস্থা হয়েছে। গ্রাহকরা নিজের গচ্ছিত টাকা নিজেই পারছেন না তুলতে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে সর্বোচ্চ তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার বেশি তুলতে পারছেন না। গ্রাহকের এমন পরিস্থিতি নিয়ে কবির ভাষায় বলা যায়- ‘গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন/নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন।’
তবে গ্রাহকের এই ভোগান্তি দূরীকরণ ও দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সবল করতে তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকগুলোকে সবল করতে নতুন করে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
গভর্নর জানান, আমরা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহযোগিতা দিচ্ছি। আমানতকারীদের সুরক্ষার জন্যেই এটি দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার থেকে এসব ব্যাংকগুলোতে টাকা পেতে শুরু করবে গ্রাহকরা। আশা করছি গ্রাহকরা রবিবার থেকে ব্যাংকে ইচ্ছেমত টাকা তুলতে পারবেন।
ব্যাংকগুলো হলো— ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।
সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আরো জানান, ব্যাংক খাতে অস্থিরতা দূর করতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হবে, গ্রাহকদের আমানত নিয়ে চিন্তার কিছু নেই, এ নিয়ে মাথা ব্যথা বাংলাদেশ ব্যাংকের। ব্যাংকিং খাতের অবস্থা খারাপ হচ্ছে না বরং আগে থেকেই খারাপ ছিল। এখন সে অবস্থার উন্নতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা একদিকে তারল্য দেবো, অন্যদিকে পুরানো টাকা আস্তে আস্তে বাজার থেকে সরিয়ে নেবো। এতে দেশের মূল্যস্ফীতি কমে আসতে পারে। তবে প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত টাকা না তুলতে গ্রাহকদের অনুরোধ করেন তিনি।
সূত্র জানায়, গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে পাঁচটি ব্যাংককে ভল্ট থেকে গত সোমবার সাড়ে ১৮ হাজার কোটি দেওয়া হয়েছে। পরদিন মঙ্গলবার অন্য দুটি ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। মূলত আওয়ামী লীগ আমলে ব্যাপক অনিয়মের কারণে তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা বেসরকারি খাতের ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংকে তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি