আনোয়ারা প্রতিনিধি : তীব্র তাপদাহ সাথে লাগাতার লোডশেডিংয়ে হাসপাতালজুড়ে ভুতুড়ে অবস্থা। অসহ্য গরমে চটপট করছে শিশুসহ সব বয়সী রোগীরা। তাই ভ্যাপসা গরমে রোগীদের স্বস্তি দিতে হাত পাকা দিয়ে বাতাস করার চেষ্টা করছে স্বজনরা। তীব্র গরমে তাতেও মিলছে না স্বস্তি। এমন চিত্র দেখা গেছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাত দশটার দিকে হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালজুড়ে নামে অন্ধকার। হাসপাতালের একমাত্র জেনারেটরও অকেজো। দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎ না থাকায় গরমের যন্ত্রণায় হাঁসফাঁস করছে শিশু রোগীসহ সব বয়সের রোগী ও তাদের স্বজনরা। অনেক রোগীকে হাতে স্যালাইনের ক্যানুলা নিয়ে বেড ছেড়ে হাসপাতালের বারান্দায় কিংবা সিঁড়িতে গিয়ে বসে থাকতেও দেখা গেছে। কেউবা অসুস্থতার যন্ত্রণা নিয়ে তীব্র গরম থেকে বাঁচতে হাঁটাহাঁটি করছেন বাহিরে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালের জেনারেটর দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হলেও মেরামত করা হচ্ছে না। গরম শুরু হওয়ার পর থেকে বেড়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। বিদ্যুৎ একবার গেলে আর আসার নাম-গন্ধ থাকে না। এ অবস্থায় কষ্ট পোহাতে হচ্ছে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের। তীব্র গরমে বেড়েছে ডায়রিয়া, জ্বর ও সর্দিসহ নানা রোগ। কিন্তু হাসপাতালে এসব রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনায় তারা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানান রোগী ও তাদের স্বজনরা।
ভুক্তভোগী রোগীর স্বজনরা জানান, চিকিৎসা নিতে এসে গরমের যন্ত্রণায় রোগী হয়ে যাচ্ছেন তারা। হাসপাতালে বিদ্যুৎ চলে গেলেও নেই কোনো জেনারেটরের ব্যবস্থা। এতে গরমের যন্ত্রণায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের।
আট বছরের শিশু রোগীর বাবা শাহেদ মাহমুদ চাটগাঁ নিউজকে বলেন, বাচ্চার ডায়রিয়া হওয়ায় ভালো চিকিৎসা সুবিধা পেতে সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলাম। কিন্তু শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করানোর পর দেখি, বিদ্যুৎ নেই। হাসপাতালের জেনারেটরও নষ্ট। রাত কিংবা দিন পুরো হাসপাতাল অন্ধকার। এছাড়া তীব্র গরমে আমরা রোগীর স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি। সরকারি সেবা কেন্দ্রে যদি এমন পরিস্থিতি হয় তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে।
হাতে স্যালাইন নিয়ে হাসপাতালে সিঁড়ির পাশে বসে থাকা রোগী হাফেজ কফিল উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়ায় কাহিল হয়ে গেছি। হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে স্যালাইন চলছে। কিন্তু গরমের যন্ত্রণায় স্যালাইন লাগিয়ে বেডে থাকতে পারছি না। তাই স্যালাইন হাতে সিঁড়ির পাশে চলে এসেছি। সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এমন নাজুক অবস্থা খুবই দুঃখজনক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মামুনুর রশিদ চাটগাঁ নিউজকে জানান, কয়েকদিন ধরে গরমের মাত্রা বেড়েছে। তারওপর মেডিকেলের জেনারেটরটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট। এতে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। নতুন জেনারেটরের জন্য অনেকবার আবেদন করেছি। কিন্তু সরকার বাজেট না দিলে কিভাবে এসব সমস্যা সমাধান করবো।
তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুৎকে ইউএনও মহোদয় বলেছেন, হাসপাতালকে অন্তত লোডশেডিংয়ের বাইরে রাখা যায় কিনা। তারা চেষ্টা করবেন বলেছেন, তবে এ বিষয়ে পুরোপুরি কথা দিতে অপারগ বলে জানিয়েছেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ