চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : খ্যাতিমান ভাষাবিজ্ঞানী, একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রাবন্ধিক ও গবেষক ড. মাহবুবুল হক আর নেই। বুধবার দিনগত রাত পৌনে ২টায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুকালে মাহবুবুল হকের বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ৭ জুলাই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে মরহুমের মরদেহ চট্টগ্রামের লালখানবাজারস্থ বাসভবনে নেওয়ার কথা রয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার সকালে সর্বস্তরের জনগনের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তাঁর মরদেহ নেওয়া হবে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। বাদ জুমা জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করার কথা রয়েছে।
ড. মাহবুবুল হকের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৩ নভেম্বর ফরিদপুরে। তবে শৈশব থেকে বেড়ে ওঠেছেন চট্টগ্রামে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৭০ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন মাহবুবুল হক। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকতা করেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনীয়া কলেজ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে।
শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রায়োগিক বাংলা ও ফোকলোর চর্চা, গবেষণা, সম্পাদনা, অনুবাদ ও পাঠ্যবই রচনা করে পরিচিতি লাভ করেন ড. মাহবুবুল হক। তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডসহ বিশেষজ্ঞ হিসেবে নানা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছেন।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেশ কয়েকটি বাংলা পাঠ্য বইয়েরও রচয়িতাও তিনি। আহ্বায়ক হিসেবে নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী ২০১২ ও ২০১৩ শিক্ষাবর্ষের বাংলা শিক্ষাক্রম ও বাংলা পাঠ্যবই প্রণয়নে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম প্রণয়নে সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে তাঁর।
তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে ‘বাংলা বানানের নিয়ম’, ‘রবীন্দ্র সাহিত্য রবীন্দ্র ভাবনা’, ‘ইতিহাস ও সাহিত্য’, ‘সংস্কৃতি ও লোক সংস্কৃতি’ এবং ‘বাংলার লোক সাহিত্য: সমাজ ও সংস্কৃতি’ প্রভৃতি।
প্রবন্ধের জন্য তিনি ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। গবেষণায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেন।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে