চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। রবিবার দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। হল ছেড়ে বেরিয়ে ছাত্রীরাও ‘আমি কে তুমি কে? রাজাকার, রাজাকার’, ‘চাইলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ স্লোগানে দিতে থাকেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ডাকে একে একে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও এমন বিক্ষোভ শুরু হয় বলে জানা গেছে।
বিক্ষোভে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বলেছেন, অন্যায্য কোটাব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলায় তাদের অপমান ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অপমান করার অধিকার কারও নেই। তারা এই অবমাননার প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছেন।
এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা না পেলে, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে? আমার প্রশ্ন দেশবাসীর কাছে। রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে, মুক্তিযোদ্ধারা পাবে না? নিজের জীবন বাজি রেখে বিজয় এনে দিয়েছিল বলে সবাই উচ্চপদে আসীন। না হলে পাকিস্তানিদের বুটের লাথি খেয়ে চলতে হতো।’
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে কোটাব্যবস্থা সংস্কার চেয়ে যারা আন্দোলন করছেন তাদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন। মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ চলাকালেই অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ও উত্তাল হয়ে ওঠে।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মধ্যরাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও (চবি) বিক্ষোভ করছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করা বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা৷
গতকাল (রবিবার) রাত ১১ টার দিকে বিভিন্ন হল ও কটেজ থেকে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে দিতে জিরো পয়েন্টে প্রধান ফটকের সামনে উপস্থিত হয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘এই বাংলার মাটি-রাজাকারের ঘাটি’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রূজাকার’ ইত্যাদি স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এসময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ করে ছাত্রলীগের কর্মীরা৷ এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল না।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা অধিকার চেয়ে আন্দোলন করতে নেমেছি, কিন্তু আমাদের রাজাকার বলা হলো। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী কখনো সেই দেশের ছাত্র জনতাকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলতে পারেন না। এমন বক্তব্য আমরা মেনে নিতে পারি না৷
ছাত্রলীগের হামলায় আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা প্রতিবাদ করতে এসেছি। কিন্তু হঠাৎ দেখি ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। ককটেল বিস্ফোরণ করলে শিক্ষার্থীরা এদিক অধিক পালিয়ে যায়।”
কোটা আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ক রাসেল জানান, “আমরা মিছিল করছিলাম, তখন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। কে মেরেছে তা জানি না। আমাদের ৪ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। একজন মেয়েও আছেন। এছাড়া আমাদের উপর ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়”।
চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক পার্থ প্রতিম বড়ুয়া বলেন, “মারামারির পরে আমি এসছি। তবে তারা নেত্রীর নামে বাজে স্লোগান দিয়েছি শুনলাম। এতোদিন কিন্তু তাদের আন্দোলনে বাধা দেওয়া হয়নি, আমরাও চেয়েছি কোটার যৌক্তিক সমাধান আসুক। কিন্তু স্বাধীন দেশে ‘আমি রাজাকার’ স্লোগান দেওয়া কখনো কাম্য নয়।”
চবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম টিবিএসকে বলেন, “রাত সাড়ে ১১টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা হঠাৎ বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। এতে ৫-৭ জন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। আন্দোলনকারীরা আমাদের আগে থেকে জানালে হয়তো এই ঘটনা এড়ানো যেত।”
২০২০-২১ সেশনের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সজিব মাহমুদ বলেন, “আমরা জিরো পয়েন্ট থেকে স্বাভাবিক স্লোগান দিয়ে দিয়ে শহীদ মিনার যাচ্ছিলাম সাড়ে ১১টার দিকে। আমরা স্লোগান দিচ্ছিলাম ‘তুৃমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’। এছাড়া সাধারণ স্লোগানগুলো দিচ্ছিলাম কোটা নিয়ে। কাটাপাহাড় রাস্তায় ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা কয়েকটা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। ভয়ে আমাদের অনেকে দৌড়ে যায়। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ দুদিক থেকে রাস্তায় বাইক নিয়ে আমাদের ৭-৮ জনকে আটকে দেয়। লাঠি এবং বাঁশ নিয়ে মারধর শুরু করে।”
সজিব মাহমুদ আরও অভিযোগ করেন, “সুমন নামের ২২-২৩ সেশনের এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের কর্মীরা অনেক মেরছে। সুমনকে পরে শাহ আমানত হলের গেস্ট রুমে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে। সে নেত্রকোনার ছেলে। পরে নেত্রকোনার অনেকগুলো ছেলে তাকে মেডিকেলে নিয়ে যায়।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে রবিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি পরে শাখারিবাজার হয়ে তাতিবাজারে যায়। ছাত্রী হলে তালা দিয়ে মেয়েদের আন্দোলনে যেতে নিরুৎসাহিত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে ছাত্রীরাও গেটের তালা ভেঙে বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
রোকসানা তৃষ্ণা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলনকারীদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাই। দেশের অভিভাবকের কাছে এমন বক্তব্য কখনোই আশা করা যায় না।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ‘তুমি কে, আমি কে— রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগানে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের হলে এমন স্লোগান দেয়ার পরিকল্পনা করেন ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা৷ এর প্রেক্ষিতে ৪৯তম ব্যাচের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের মো. সাঈফ খান মেসেজ দেন। পরে হলের ১২৪ নম্বর কক্ষ থেকে স্লোগান পুরো হলে ছড়িয়ে পড়ে৷ এ সময় শিক্ষার্থীরা সমস্বরে স্লোগান দিতে শুরু করলে পলিটিকাল ব্লক থেকে ৪৮তম ব্যাচের সিনিয়ররা এসে তাদের সবাইকে ডেকে হলের ডাইনিংয়ে নিয়ে যান।
এরপর শিক্ষার্থীদের কাছে ‘রাজাকার’ স্লোগান দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হয়। এ সময় ‘শিবির সন্দেহে’ শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন তল্লাশি করা হয়৷ এরই মধ্যে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক নাজমুল হাসান তালুকদারকে ডেকে নিয়ে আসেন ছাত্রলীগ নেতারা৷ পরে হল প্রাধ্যক্ষের উপস্থিতিতে ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ক্ষমা চাইতে বলা হয়। ক্ষমা চাইলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো ক্যাম্পাস আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরে রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
রাত সোয়া ১২টার দিকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন হল থেকে বের হয়ে আসেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্লোগান দিতে থাকেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী কখনো সে দেশের ছাত্রজনতাকে রাজাকারের বাচ্চা বলতে পারেন না। তার এমন উক্তির প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা এতো রাতেও রাস্তায় নেমেছেন।
অন্যদিকে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকেন্ড গেটে জড়ো হতে থাকেন এবং ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় রাজাকারের ঠাই নাই’, ‘একটা একটা রাজাকার ধর, ধরে ধরে জবাই কর’, ধরি ধরি ধরি না, ধরলে মোরা ছাড়ি না’ স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় তারা লুৎফর হলের ভেতরে ঢুকে স্লোগান দিলে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া’, ‘ভুয়া’ বলতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে ছাত্র পরামর্শক অধ্যাপক ড. ফরহাদ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এধরনের বিশৃঙ্খলা হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড়ে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের পাদদেশে এসে মিলিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল এবং পাশ্ববর্তী মেস থেকে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন আমাদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন তখন পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী তাকে ভারতের দালাল আখ্যা দিয়েছে। কিন্তু তিনি সেদিকে কর্ণপাত না করে অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। আমরা আজ শান্তিপূর্ণ ভাবে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সরকার প্রধানের বক্তব্য আমাদের হতাশ করেছে। আমাদের দাবিগুলো আমলে নিয়ে পড়ার টেবিলে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি।
রবিবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা দিবস হল থেকে আবাসিক শিক্ষার্থীরা প্রথমে বিক্ষোভ করেন। পরে সাড়ে ১১টার দিকে লিপুস ক্যান্টিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল ঘুরে, বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রধান ফটকের সামনে জড় হয়ে একই স্লোগান দিতে থাকেন তারা। যা সোয়া ১২টা পর্যন্ত চলে।
রাত ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল,শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল এবং শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় স্লোগান দিতে দেখা যায়। পরে সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু ও নজরুল হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে জড়ো হোন।
মিছিলে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য প্রদানকালে মুক্তিযোদ্ধা বাদে সবাইকে রাজাকারের সন্তান ও নাতি বলেছেন। যেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
গত ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলনে আছেন কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবি জানানো শিক্ষার্থীরা। ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন শুরু হয়েছিল। কিন্তু গত ৭ জুলাই থেকে তারা এক দফা দাবির কথা বলছেন। দাবিটি হচ্ছে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করা। সব গ্রেডে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কোটা রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তাঁরা। আজ বঙ্গভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা করে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস