বিএনপি-জামায়াতের ফুটেজবাজি, জানাযায় জায়গা পাননি সমন্বয়করা!

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হয়ে টানা ৭০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কাউসার মাহমুদের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার এশা’র নামাজের পর নগরীর কমার্স কলেজের মাঠে তার নামাজে জানাযা সম্পন্ন হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সমন্বয়কেরা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। তবে জানাযার সামনের সারিতে উপস্থিত অনেকের বিরুদ্ধে ফুটেজবাজির অভিযোগ তুলেছেন সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার ১৪ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রাম কমার্স কলেজের একটি সংকুচিত জায়গায় শহীদ কাউসার মাহমুদের কফিনটি রাখা হয়েছিল। জানাযা শুরু হওয়ার প্রাক্কালে প্রথম সারিতে বিএনপি, জামায়াত, ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা দাঁড়িয়ে পড়েন। প্রথম সারিতে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরী, বিএনপি নেতা আবুল হাশেম বক্কর, ব্যারিস্টার মীর হেলালসহ নেতাকর্মীরা ছিলেন। নেতাকর্মীরা সামনের সারিতে থাকায় তৃণমূল নেতাকর্মীরাও সামানের সারিতে দাঁড়িয়ে পড়ে। এর সাথে আবার সংবাদ সংগ্রহের জন্য কফিনের সামনে মিডিয়া কর্মীরাও দাঁড়িয়ে পড়েন। ফলে জানাযায় জায়গাটিতে প্রচন্ড ভিড় সৃষ্টি হয়। একদিকে সংকুচিত স্থান তার উপর অংশগ্রহণকারীদের চাপে পড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের কেউ কেউ শহীদ কাউসার মাহমুদকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেননি। এ কারণে সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীরা একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। এসময় শিক্ষার্থীদের বিএনপি-জামায়াতের ফুটেজবাজির বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতেও দেখা যায়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমরা এসেছি ভাইয়ের কফিনে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে। কিন্তু বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মীদের ফুটেজবাজির কারণে আমরা কিছু করতে পারিনি। শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারিনি, দোয়া পড়তে পারিনি। ভাইকে একটু ছুঁয়ে দেখতে পারিনি। বিএনপি জামায়াত লাশ নিয়ে রাজনীতি করতে এসেছে।

সমন্বয়ক ও ছাত্ররা আরও অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি জামায়াত যদি ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আগে থেকে আন্দোলনে নামত। তাহলে আজ দেড় হাজার ছাত্রকে শহীদ হতে হতো না। তারা লাশ নিয়ে রাজনীতি করতে এসেছে। আমরা লাশের রাজনীতি চাই না।

গত ৪ আগস্ট নগরের নিউমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে আহত শিক্ষার্থী কাউসার মাহমুদকে আগ্রাবাদ ইসলামী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ২২ সেপ্টেম্বর কাউছার মাহমুদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর সিএমএইচের সহযোগিতায় ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ঢাকা সিএমএইচে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কাউসার মাহমুদ মারা যান।

চাটগা নিউজ/উজ্জ্বল/এসএ

Scroll to Top