রামু প্রতিনিধি: কক্সবাজারের রামুর দুর্গম চার গ্রামকে বাল্যবিবাহ মুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রামগুলো হলো গর্জনিয়ার পূর্ব বোমাংকিল, জোয়ারিয়ানালার গুচ্ছগ্রাম-সিকদার পাড়া, কচ্ছপিয়ার হাইস্কুল পাড়া ছোট জামছড়ি ও ফতেখাঁরকুলের উত্তর হাইটুপি।
দুর্গম এ গ্রামগুলো স্ব স্ব ইউনিয়নের পিছিয়ে পড়া এবং আধুনিক সভ্য সমাজের ছোঁয়া থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন। তাই এ সমস্ত এলাকাগুলো যুগযুগ ধরে বাল্যবিবাহের ঝুঁকিতে ছিল। যার ফলে ওই চার গ্রামে দীর্ঘদিন বাল্য বিবাহ রোধে কমিটি গঠনসহ সচেতনতায় নানান প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে রামু উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষণা উপলক্ষে আলোচনা সভায় স্থানীয় প্রশাসন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও আন্তজার্তিক উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন যৌথভাবে এই ঘোষণা দেয়। এসময় অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক অভিভাবক তাদের ছেলে মেয়েদের বাল্য বিবাহ দিবেন না বলে সমস্বরে অঙ্গীকার করেন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাল্যবিবাহ সমাজে স্বাভাবিক শৃংখলা নষ্ট করে এবং দাম্পত্য জীবনে অকালে ডেকে নিয়ে আসে নির্যাতন-অশান্তি। পাশাপাশি বাড়িয়ে তুলছে সামাজিক নৈতিক অবক্ষয়।
বাল্যবিবাহের কারণে (স্বামী-স্ত্রী) শারীরিক ও মানসিক প্রতিক্রিয়া বা সমস্যা দেখা দেয়। বাল্যকালে বিয়ের ফলে সন্তান জন্মদানের ব্যাপারেও দেখা দেয় জটিলতা। শুধু তাই নয়, এই অল্প বয়সে সন্তান ধারণের ফলে মেয়েদের স্বাস্থ্যের ওপর বিরাট চাপ পড়ে এবং স্বাস্থ্যহানী ছাড়াও তাদেরকে অকাল মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়। বাল্য বিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি, এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) নিরুপম মজুমদার এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বসার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব সেবাস্টিন রেমা, ওয়ার্ল্ড ভিশনের সিনিয়র ডিরেক্টর অপারেশন্স চন্দন জেড গমেজ, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ’র ডেপুটি ডিরেক্টর মঞ্জুর এস পালমা, রামু থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবু তাহের দেওয়ান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান(ভারপ্রাপ্ত) আফসানা জেসমিন পপি, বিএনকেএস এর নির্বাহী পরিচালক হ্লা সিং নু।ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুট্টো, জোয়ারিয়ানালা ইউপি চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন প্রিন্স, গর্জনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বাবুল।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ রামু এপি ম্যানেজার প্রণয় এস পালমা এপি স্পন্সরশীপ অফিসার অর্ণা কথা রায়, বিএনকেএস রামু এপি প্রোগ্রাম ম্যানেজার শরৎ কুমার চাকমা সহ অনেকে।
চাটগাঁ নিউজ/এমআর