চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) প্রতীক দত্ত। এই ম্যাজিস্ট্রেট কাজের জন্য যতটা না আলোচনায় এসেছেন, তার চেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছেন বাবার বয়সী লোকদের গায়ে হাত তোলা আর বেয়াদবী আচরণের জন্য। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী এই প্রতীক দত্ত বুয়েটের ছাত্র থাকাবস্থায় এক শিক্ষককে পিটিয়েছিলেন। এই অপরাধে তাকে বুয়েট থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। হাইকোর্টের আদেশে সেবার তার বহিষ্কারাদেশ স্থগিত হয়।
ছাত্রজীবন থেকে চাকরি জীবনে এসে তার বেয়াদবী যেন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। চলতি বছর মার্চে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় ‘এ বি দাশ অ্যান্ড ট্রেডিং কোম্পানি’র স্বত্ত্বাধিকারী বাবার বয়সী এক এলাচ আমদানিকারকের সাথে কথা কাটাকাটির জেরে তার সাথে বেয়াদবী করে বসেন এই প্রতীক দত্ত। ওই ব্যবসায়ীর মুখে ‘হোল্ড অন’ শুনে বাবার বয়সী ব্যবসায়ীর উপর চড়াও হয়ে উঠেন। অভিযানে গিয়ে অফিসিয়াল ভদ্রতা ত্যাগ করে প্রতীক দত্তের এমন আচরণের ভিডিও ভাইরাল হলে গণমাধ্যমে তীব্র সমালোচিত হন তিনি।
এবার গোপালগঞ্জে কোটালিপাড়ায় আবদুস ছামাদ নামে বাবার বয়সী এক ঠিকাদারকে প্রকাশ্যে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্তের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের জামিলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
অভিযুক্ত ওই এসিল্যান্ডের শাস্তির দাবিতে আজ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মাঝবাড়ি-রাধাগঞ্জ সড়কের জামিলা নামক স্থানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) একটি ব্রিজের নির্মাণকাজ চলছে। ওই কাজের ঠিকাদার আব্দুস সামাদকে খাল থেকে মাটি তোলা নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে চড় মারেন কোটালীপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্ত।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শফিউল আজম, উপসহকারী প্রকৌশলী মনজুরুল হক ও নির্মাণ শ্রমিকসহ অর্ধশতাধিক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। এ সময় স্থানীয় জনতা উত্তেজিত হলে প্রতীক দত্ত দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
ঠিকাদার আব্দুস সামাদ বলেন, এসিল্যান্ড স্যার আমার সঙ্গে যা করেছেন বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের ওপর মহল থেকে আমার শ্বশুর ইউনুস শরিফের সঙ্গে মীমাংসার দিকে গেছে। আমাকে কিছু বলতে বলিয়েন না। ওপর মহল থেকে ঝামেলায় আছি।
ইউনুস শরিফ বলেন, আমার জামাইকে চড় দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে এসিল্যান্ড ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাতে আমার কাছে ভুল স্বীকার করেছেন। বিষয়টির মীমাংসা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্ত বলেন, আমার সঙ্গে ঠিকাদার আব্দুস সামাদের কথা-কাটাকাটি হয়েছে। ঠিকাদারকে চড় মারার কোনও ঘটনা ঘটে নাই। যে ঘটনা ঘটেছে তা মীমাংসা হয়ে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহীনুর আক্তার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কোনও অভিযোগও পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি