বাঁশখালী প্রতিনিধি : বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র তোফাইল বিন হোছাইন ও কয়েকজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের পদত্যাগ এবং অপসারণের দাবীতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসুচী পালন করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আজ (১৮ আগস্ট) রবিবার সকাল থেকে পৌরসভা ভবন ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের গেইটে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। ছাত্রদের এই বিক্ষোভ ও অবস্থানে স্থানীয় বিএনপি জামায়াত নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
এসময় তারা মেয়র ও চেয়ারম্যানদের বিনা ভোটের চেয়ারম্যান দাবী করে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের আহবান জানানোর পাশাপাশি প্রশাসনের প্রতি তাদের অপসারণের দাবী জানান।
পদত্যাগ দাবী করা হয় কালীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শাহাদাত আলম, কাথরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইবনে আমিন, বৈলছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন, সরল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ চৌধুরী, চাম্বল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী, শীলকূপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কায়েস ছরওয়ার সুমন, গন্ডামারা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওসমান গণি এবং ছনুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ। তাছাড়া পৌরসভার মেয়র তোফাইল বিন হোছাইনের পদত্যাগ এবং অপসারণ দাবী করা হয়। আন্দোলন চলাকালে অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সের গেইট ছিল তালাবদ্ধ। ভয়ে ইউপি মেম্বার এমনকি কর্মকর্তারাও অফিসে আসেননি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণ আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাঁশখালী পৌরসভার মেয়র তোফাইল বিন হোছাইনসহ বাঁশখালীর অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধি এখন লাপাত্তা। আত্মগোপনে চলে গেছেন অনেকে। ফলে সাধারণ মানুষ, যারা পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে প্রয়োজনীয় সেবা নিতে যান, তারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে বাঁশখালীর আওয়ামী লীগ নেতা এবং নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত পৌরসভার মেয়র ও ইউপি চেয়ারম্যানরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্রভাবে বিজয়ী পুইছড়ির তারেকুর রহমান, সাধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন কামাল, পুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসহাব উদ্দিন, শেখেরখীল ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদুল ইসলাম ফারুকী এবং বাহারছড়ার রেজাউল করিম ইউনুস নিয়মিত অফিস করছেন বলে জানা গেছে।
তাছাড়া খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার অফিস করছেন বলে দাবী করে ফেসবুকে ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেন। চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার জানান, আমি ইউপি সদস্যদের নিয়ে নিয়মিত অফিস করছি। খানখানাবাদ ইউনিয়নে কোন জনদুর্ভোগ নেই। পরিষদের সব কার্যক্রম স্বাভাবিক চলছে বলেও জানান তিনি।
এছাড়া বাঁশখালীর অন্যান্য সকল ইউপি চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র এমনকি সাবেক দুইবারের এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীও লাপাত্তা। সরকার পরিবর্তনের পর সাবেক এই এমপির চাচা চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ এমনকি তার মেয়ে যুব মহিলালীগ নেত্রী রওকত নুর প্রিয়তারও কোন হদিস নেই।
তাছাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসাইন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরীমন আক্তান নুরীও অফিস করছেন না।
উপজেলা চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেছেন, তিনি এলাকাতেই আছেন। পরিবেশ পরিস্থিতি আরেকটু উন্নতি হলে নিয়মিত অফিস করবেন তিনি।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার জানান, বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানিয়েছি। নির্দেশনা মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
চাটগাঁ নিউজ/জসীম/এআইকে