ফেসবুক লাইভে এসে ওসিকে পেটানোর হুমকি সন্ত্রাসী সাজ্জাদের

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ফেসবুক লাইভে এসে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি পেটানোর হুমকি দিয়েছেন সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে নিজের ফেসবুকে লাইভে ওসি আরিফ হোসেনকে এ হুমকি দেন তিনি।

লাইভে তিনি কোনো অবস্থাতেই তার হাত থেকে ওসি বাঁচতে পারবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন। ১৯ মিনিট ২৯ সেকেন্ডের লাইভে এসে তিনি বিভিন্ন কথা বলেন। ওসিকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালও করেন। এ ঘটনায় ওসি বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

এক পর্যায়ে ওসি আরিফকে গালাগাল করে সাজ্জাদ বলেন, “ওসি আরিফ আমি তোকে পেটাব। বায়েজিদ থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত পেটাব। দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেন, আমার হাত থেকে বাঁচতে পারবেন না। প্রয়োজনে আমি মরে যাব। কিন্তু হার মানব না। দেখি কার জোর বেশি।”

লাইভে সাজ্জাদ বলেন, “ওসি আরিফ চাঁদাবাজিসহ তার সন্তান হত্যায় জড়িত। তাকে যাতে বদলি করা হয়।”

পুলিশ জানিয়েছে, সাজ্জাদ হোসেন চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজির অভিযোগে ১৪টি মামলা রয়েছে। গত বছরের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা পুলিশ তাকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছিল। পরের মাসে তিনি জামিনে বেরিয়ে যান।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, “ফেসবুকে লাইভে এসে শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদের হুমকির ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। মাসখানেক আগেও একবার এমন হুমকি দিয়েছিলেন। যখনই তার বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করি তখনই হুমকি দেন, ফেসবুকে অপপ্রচার চালান। সোমবারও সাজ্জাদের বাহিনীর ৬ জনকে গ্রেফতার করেছি। আমি সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করব। যারা চাঁদাবাজি করে ও যাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে, চলবে। সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা কাজ করতেছি। ভয় পাই না। সাজ্জাদ যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেন তার সব ডকুমেন্ট আমাদের কাছে আছে।”

জানা গেছে, গত বছরের ২৯ আগস্ট নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে মাসুদ কায়সার (৩২) ও মোহাম্মদ আনিস (৩৮) নামে দু’জনকে হত্যা করা হয়। এই চাঞ্চল্যকর ডাবল মার্ডারের ঘটনার দুই মামলায় সাজ্জাদ ও তার সহযোগীদের আসামি করা হয়। একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর বিকালে নগরের চাঁন্দগাঁও থানার অদূরপাড়া জাগরনী সংঘ ক্লাব এলাকায় স্থানীয় ব্যবসায়ী আফতাব উদ্দিন তাহসীনকে (২৭) গুলি করে হত্যা করা হয়। সেই মামলায়ও সাজ্জাদসহ তার বাহিনীর সদস্যদের আসামি করা হয়েছে। গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর বায়েজিদ বোস্তামী থানার কালারপুল এলাকায় শটগান হাতে সাজ্জাদ হোসেনসহ আরও দু’জন গুলি করতে করতে একটি নির্মাণাধীন ভবনে প্রবেশ করে। এরপর ওই ভবন মালিকের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এছাড়াও সাজ্জাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজির ১০টিরও বেশি মামলা রয়েছে।

গত বছরের ৫ ডিসেম্বর নগরের অক্সিজেন মোড় এলাকার একটি সাততলা ভবনের পঞ্চম তলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে ধরতে অভিযানে যায় পুলিশ। সেখান থেকে পুলিশকে গুলি করে পালিয়ে যায় সাজ্জাদ। গুলিতে পুলিশের দুই সদস্যসহ মোট চারজন গুলিবিদ্ধ হন। এরপরও তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এখনও অধরা শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ। বায়েজিদ ও আশেপাশের এলাকার সহযোগীদের নিয়ে চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপর্কম করে আসছেন তিনি।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top