ফের মিয়ানমারের মর্টারশেল এসে পড়ল বাংলাদেশে, বাড়ছে আতঙ্ক

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল বাংলাদেশের নাইক্ষ্যংছড়ি লোকালয়ে পড়ার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক কাটছে না। যে কোনো মুহূর্তে ফের গোলাগুলির আশঙ্কা করছেন তারা। মঙ্গলবার রাতেও অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ে।

এ অবস্থায় বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি ৩ নম্বর ঘুমধুম ইউনিয়নের ভাজাবনিয়া সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সরকারি জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে থেমে থেমে সংঘাত চলমান। এ সংঘাতে বিভিন্ন সময় নিক্ষিপ্ত গোলা তাদের সীমানা পেরিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী লোকালয়ে এসে পড়ছে। এতে নিত্যদিনের কাজে ও শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাতেও ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে কোনার পাড়া এলাকায় বিস্ফোরিত মর্টার শেলের খোসা পাওয়া যায়। মঙ্গলবারও দিনগত রাতে ঘোনারপাড়া এলাকায় মিয়ানমার থেকে নিক্ষিপ্ত অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এসে পড়ে। এসব ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে এ পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

সীমান্তের চলমান অস্থিরতা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় বুধবার (৩১ জানুয়ারি) তুমব্রু, কোনারপাড়া, ক্যাম্পপাড়া, তুমব্রুবাজারসহ কয়েকটি পাড়া পরিদর্শন করেছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার (এসপি) সৈকত শাহীন।

তাদের সঙ্গে ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমজাদ হোসেন, সহকারী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার বিশ্বাস, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা, ঘুমধুম তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক মাহাফুজুর রহমান প্রমুখ। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো পরিদর্শন করেন তারা।

জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, সীমান্তের ওপারে গতকাল ১৮টি মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ শুনেছেন স্থানীয়রা। এ কারণে অনেকে আতঙ্কে আছেন। তবে ভয়ের কোনো কারণ নেই। সীমান্তে ৩৪ বিজিবির সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছেন। এ ছাড়া পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন সার্বক্ষণিক খবর রাখছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, আমরা আতঙ্কে আছি, কখন কী হয় জানি না। বিনা প্রয়োজনে স্থানীয়দের ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে।

এদিকে ঘুমধুম বাইশফাঁড়ি বিওপির বিশেষ টহল দল বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে অবৈধ অনুপ্রবেশের সময় মিয়ানমারের তিনজন উপজাতি নাগরিককে আটকের দুই ঘণ্টা পর পুশব্যাক করেছে। ৩৪ বিজিবির অধীনস্থ সীমান্তের ৩৭ নম্বর পিলার এলাকা থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মগপাড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি। তারা মিয়ানমারের মংডু জেলার বাসিন্দা বলে জানা যায়। পরে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বাইশফাঁড়ি বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত পিলার ৩৭ এলাকার আমবাগান দিয়ে ওই তিনজনকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পুশব্যাক করা হয়।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top