রামু প্রতিনিধি: পর্যটন শহর সমুদ্র কন্যা কক্সবাজারের সংসদীয় আসন ২৯৬ কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনে টানা হ্যাটট্রিক করলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল। ২০১৪,২০১৮ সালের দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিনি তৃতীয় বারের মত জয়ী হয়েছেন।
২৯৬ কক্সবাজার ৩ আসনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৭৬ কেন্দ্রের মধ্যে সাইমুম সরওয়ার কমল পেয়েছেন ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৩৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদের ঈগল প্রতীক পেয়েছে ২১ হাজার ৯ শত ৪৬ ভোট। এ নিয়ে দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৯০টি। ৭ জানুয়ারি কক্সবাজার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রকাশিত ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে। কক্সবাজার-৩ আসনে আসনে মোট ভোটার ৪ লক্ষ ৮৯ হাজার ৬১০। দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রাথী সহ মোট প্রার্থী ছিলে ৬ জন। ৭ জানুয়ারি সকাল ৮ টা থেকে শুরু হয়ে ৪ টা পর্যন্ত ১৭৬ কেন্দ্রে চলে ভোট গ্রহণ।
এদিকে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনে মোট ভোটার ছিলেন ৪ লক্ষ ৮৯ হাজার ৬১০ জন। পুরুষ ভোটার ছিলেন ২ লক্ষ ৬০ হাজার ৫৯৭ এবং মহিলা ভোটার ছিলেন ২ লক্ষ ২৯ হাজার ১৩। মোট ভোট কেন্দ্র ১৭৬ টি। তার মধ্যে বুথ সংখ্যা ১ হাজার ৩০ টি। তারমধ্যে সদর উপজেলায় উপজেলায় মোট ভোটার ২ লক্ষ ১৭ হাজার ১২২ জন। রামু উপজেলায় মোট ভোটার ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭৫১ জন। ঈদগাঁও উপজেলায় মোট ভোটার ৮৭ হাজার ৭৩৭ জন।
শিক্ষা জীবনে সাইমুম সরওয়ার কমল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে বিএসএস ও এমএসএস ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস বিশ্ববিদ্যালয় ইউএলবি থেকে আর্ন্তজাতিক রাজনীতি বিষয়ে এমএসএস ডিগ্রী অর্জন করেন। আমেরিকার মিশিগান স্টেইট ইউনির্ভাসিটি থেকে তিনি ইউনিয়ের বাহ্যিক সম্পর্ক বিষয়ে ডিপ্লোমা এবং ফ্রান্সের ওইসিডি থেকে দি অর্গনাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন এন্ড ডেভলপমেন্ট বিষয়ে প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন। কর্মজীবনে সাইমুম সরওয়ার কমল ২০১৩ সালে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন।
রাজনৈতিক জীবনে সাইমুম সরওয়ার কমল ১৯৮৫ সালে রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৭ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ও ১৯৯৩ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
তিনি ২০০৫ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।এদিকে সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ আসন থেকে অংশ নিয়ে তিনি পরাজিত হন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি তারিখে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি ২ লাখ ৫৩ হাজার ৮২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের লুৎফর রহমান কাজল পান ৮৬ হাজার ৭১৮ ভোট। তিনি জাতীয় সংসদের তথ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য দ্বিতীয়বারের মতো মনোনীত হন।
তার বাবা ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী বাংলাদেশের একজন কূটনীতিবিদ ও রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তানের এমপিএ ও বাংলাদেশের সাবেক সাংসদ। তাছাড়া তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ১৯৭০ পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে এমপিএ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৭৩ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তৃতীয়বার সংসদ সদস্য হিসাবে অনুভুতি জানাতে গিয়ে সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি বলেন, আমি মানুষকে অনেক ভালোবাসি। আমি শুধু গত ১০ বছর নয় তারও আগে থেকে মানুষের সাথে সু-সম্পর্ক,সৌহার্দ্য, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করেছি সকল দল,সম্প্রদায় এবং সকল মতের সাথে। আসলে আমি নিজেই বুঝতে পারিনি মানুষ আমাকে এভাবে ভোট দেবে। এখন আমার দায়বদ্ধতা বেড়েছে। আমার সেবার পরিমাণ,উন্নয়নে আরো বেশি নজর দিতে হবে, আরো বেশি কাজ করতে হবে মানুষের জন্যে। এতো বেশি ভোট আমাকে দিয়েছে এগুলার প্রতিদান দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই,শুধু আমার নজর,দৃষ্টি,আন্তরিকতা,সেবা,উন্নয়ন আমি অব্যাহত রাখবো ইনশাআল্লাহ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।