চাটগাঁ নিউজ ডেস্কঃ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ডায়ালেসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করা মোস্তাকিমকে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে করা মামলাটির খারিজ আদেশের পর আবারও ফৌজদারী রিভিশন মামলা গ্রহণ করেছে আদালত।
বুধবার (৬ মার্চ) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. জেবুন্নেছা এই আদেশ দেন। এসময় ফৌজদারী রিভিশন মামলাটি গ্রহণ করে প্রতিপক্ষগণের প্রতি নোটিশ জারি এবং মূল নথি তলব করেছেন আদালত। একইসঙ্গে আগামী ২০ মার্চ মূল নথিসহ শুনানির জন্য দিন ধার্য্য করা হয়।
গত ৪ মার্চ নিম্ন আদালতের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে মোস্তাকিমের রিভিশন মামলাটি শুনানির জন্য ধার্য্য ছিল চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে। মামলাটি শুনানি হলেও পরবর্তী আদেশ জন্য বহাল রেখেছিলেন আদালত।
এই ঘটনার তদন্তে কোনপ্রকার সত্যতা পাননি বলে আদালতে রিপোর্ট দেয় সিআইডি। তবে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে মোস্তাকিমের করা মামলায় ঘটনার সত্যতা পায়নি বলে সিআইডি তদন্ত রিপোর্ট দিলেও মোস্তাকিমসহ আন্দোলন করা অন্যান্য স্বজনদের বিরুদ্ধে পুলিশের করা মামলার তদন্ত রিপোর্ট এখনো আদালতে আসেনি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সৈয়দ মোস্তাকিম তার মাকে গত ৭ বছর ধরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস করান। ডায়ালাইসিস ফি বাড়ানো প্রতিবাদে আন্দোলন করেন তিনিসহ রোগীর স্বজনরা। গত বছর জানুয়ারির ১০ তারিখ তারা চমেক হাসপাতালের প্রধান গেটে জড়ো হয়ে মানববন্ধন করেন। এসময় পাঁচলাইশ থানার তৎকালীন ওসি নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে এসে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন।
একপর্যায়ে ওসি নাজিম মোস্তাকিমকে গ্রেফতার করে প্রথমে একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিচে মারধর করেন। মারধরের একাধিক ভিডিও ফুটেজ বিভিন্ন মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে থানায় তাকে মারধর ও নির্যাতন করা হয়। মারধরের সময় এসআই আবদুল আজিজ মোস্তাকিমকে বলেন, ‘ওসি নাজিম স্যারের সঙ্গে আর বেয়াদবি করবি? শালারে রিমান্ডে এনে থানায় পিটাতে হবে, তারপর বুঝবি পুলিশ কি জিনিস?’ এরপর থানায় মারধরের বিষয়টি ফাঁস করলে মোস্তাকিমকে ক্রসফায়ার দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
কিডনি ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে পুলিশের সাথে আন্দোলনরতদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উল্টো মোস্তাকিমের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান। যার প্রেক্ষিতে মোস্তামিককে পাঠানো হয় কারাগারে।
পরে কারাগার জামিনে মুক্তি পেয়ে তাকে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে পাঁচলাইশ থানায় ওসিসহ ২ জন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন সৈয়দ মো. মোস্তাকিম। এই মামলায় মোস্তাকিম ও তার পরিবারকে নিরাপত্তার আর ঘটনাটি তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত।
চাটগাঁ নিউজ/এসবিএন