চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পাহাড়ে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের যেসব অবৈধ সংযোগ রয়েছে সবগুলো বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেছেন-পাহাড় থেকে স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ এবং তাদের পুনর্বাসন সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, কিন্তু সমস্যা হলো তারা পাহাড় ছেড়ে যেতে চান না। এর পরও আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ বিভিন্ন জায়গায় তাদের কিছু কিছুকে যে পুনর্বাসন করা হয়নি তা নয়।
আজ ২০ জুন (বৃহস্পতিবার) বিকেেল চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ভারী বৃষ্টিপাতের কারনে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের পূর্বাভাস পেয়ে বৈরি আবহাওয়ায় দীর্ঘ দশ মাস পর পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৮তম সভায় বিভাগীয় কমিশনার ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এসব নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, ‘জরুরি অবস্থাতেই এই মিটিং আহ্বান করা হয়ে থাকে। যারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাহাড়ে বসবাস করছে তাদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ইতিমধ্যে সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যারা অবৈধভাবে পাহাড়ে বসবাস করছেন তাদের সকল ধরনের পরিসেবা (পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস) বিছিন্ন করতে হবে এবং এসকল সংস্থাকে ১৫ দিন পরপর এ কমিটিকে অগ্রগতি জানাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদে সারাবছর কার্যক্রম চলবে এবং চলছেও। পাহাড় কাটলে মামলা হচ্ছে, জরিমানা হচ্ছে। রেগুলার মামলা হচ্ছে আবার ভ্রাম্যমান আদালতেও মামলা হচ্ছে। এমন না যে শুধু আজকের জন্য হচ্ছে। এটা সারাবছর হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ৫ হাজার ৩০০টি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। এসব সংযোগ দিয়ে পাহাড়ে ঝুকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে।
এতে করে একটু বৈরি আবহাওয়া হলেই সেখানে পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিচ্ছে। তাই এসব অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেন বিভাগীয় কমিশনার। ১৫ দিন পর পর এ সংক্রান্ত বিষয়ে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে তথ্য দেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।
সভায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, চট্টগ্রাম নগরের ২৬টি পাহাড়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছি। কোনো অবস্থাতে পাহাড় কাটা যাবে না। পাহাড় থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে ১০ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। গত এক বছরে শুধু মহানগরে ৫১টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সেখান থেকে ১১টি পরিবারকে সরিয়ে আনা হয়েছে।
যারা নিয়মিত লোকচক্ষুর আড়ালে পাহাড় কাটছে তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিয়েছে সে বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস তার বক্তব্য তুেল ধেরন।
সভায় পাহাড়ে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়ে পিডিবি চট্টগ্রামের সহকারী প্রকৌশলী তৌফিকুল আলম বক্তব্য দেন।
এদিকে আবহাওয়ার বার্তা পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও চসিক। মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং শুরু করেছে সংস্থা দুটি। জুনের ১৯ তারিখ বুধবার সন্ধ্যা থেকে সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন নগরের ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরতদের সরিয়ে আসতে মাইকিং করছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রাম বিভাগে বুধবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী (৪৪-৪৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটারের উপরে) বর্ষণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমি ধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর এবং নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস