সিপ্লাস ডেস্ক: নেপালে শুক্রবার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার পর উদ্ধারকর্মীরা এখন পর্যন্ত ধসে পড়া ঘরগুলোর ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৫৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন। আট বছরের মধ্যে দেশটির সবচেয়ে খারাপ ভূমিকম্পে নয়াদিল্লির মতো দূরবর্তী জায়গার ভবনগুলোও কেঁপে ওঠে।
নেপালের ন্যাশনাল সিসমোলজিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে পশ্চিমে জাজারকোট অঞ্চলে ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। তবে জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্সেস এটিকে ৫.৭ এবং মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ ৫.৬ মাত্রার বলে পরিমাপ করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ বিভাগের কর্মকর্তা রমা আচার্য জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে জাজারকোটের ১০৫ জন এবং পার্শ্ববর্তী রুকুম পশ্চিম জেলার ৫২ জন। এ ছাড়া রুকুম পশ্চিমে অন্তত ৮৫ জন এবং জাজারকোটে ৫৫ জন আহত হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এদিকে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন। কারণ উদ্ধারকারীরা রাজধানী কাঠমাণ্ডু থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার পশ্চিমে কেন্দ্রস্থলের কাছে পাহাড়ি এলাকায় শনিবারের প্রথম দিকে পৌঁছন।
জাজারকোট জেলা কর্মকর্তা হরিশ চন্দ্র শর্মা ফোনে বলেছেন, ‘আহতের সংখ্যা কয়েক শ হতে পারে এবং মৃতের সংখ্যাও বাড়তে পারে।’
যদিও ভূমিকম্পের তীব্রতা গুরুতর ছিল না। তবে এলাকায় নিম্নমানের নির্মাণের কারণে এবং লোকেরা ঘুমিয়ে থাকার সময় ভূমিকম্পটি আঘাত করেছিল বলে ক্ষয়ক্ষতি এবং মৃতের সংখ্যা বেশি বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
স্থানীয় টিভি চ্যানেলে দেখা গেছে, উদ্ধারকারীরা খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ খনন করছে, ধসে পড়া বাড়ির ধ্বংসাবশেষের মধ্যে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের সন্ধান করছে।
আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যেতেও দেখা যায়।
২০১৫ সালের পর এ ভূমিকম্পটি সবচেয়ে মারাত্মক। সে বছর দুটি ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার লোক মারা গিয়েছিল। পুরো শহর, শতাব্দীপ্রাচীন মন্দির এবং অন্যান্য ঐতিহাসিক স্থানগুলো তখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।
ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল রামিদান্দা গ্রামে।
ন্যাশনাল সিসমোলজিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, জাজারকোটে ১৭৫টি আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে এবং তার মধ্যে ছয়টি ছিল ৪ বা তার বেশি মাত্রার।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাজারকোটে তিনটি শহর এবং তিনটি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে, যার জনসংখ্যা এক লাখ ৯০ হাজার।
সূত্র : রয়টার্স