চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : এবার নিয়োগ দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের পা ধরলেন ছাত্রলীগ নেতা। পায়ে পড়ার সময় উপাচার্য ওই ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন।
সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এমনই একটি ভিডিও।
পা ধরা ছাত্রলীগ নেতার নাম মইনুল ইসলাম রাসেল। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং উপগ্রুপ একাকারের নেতা। একাকার নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
বুধবার (২০ মার্চ) চবির সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতারের চট্টগ্রাম শহরের কাজীর দেউরি এলাকা সংলগ্ন নিজ বাসার নিচে এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিও ফুটেজটিতে দেখা যায়, লাইভলেন এলাকার বাসার নিচে ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। এ সময় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার লিফটে করে বাসার নিচে নামলে লিফটের সামনে থাকা চবি ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের নেতা উপাচার্যের পথ আটকে ধরেন। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও একাকার গ্রুপের নেতা মইনুল ইসলাম রাসেল চাকরির জন্য উপাচার্য শিরীণ আখতারের পায়ে পড়েন। একই সময়ে আরেক সহ-সভাপতি মুজিবর রহমানও পায়ে পড়ে যান।
গত ১৯ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য ড. মো. আবু তাহেরকে নিয়োগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় শিরীণ অধ্যায়। উপাচার্যের বিদায়কে কেন্দ্র করে চবি পরিণত হয় চাকরির বাজারে। শেষ দিনে প্রায় ৪০ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন উপাচার্য।
এছাড়া উপাচার্য তার মেয়াদকালের চার বছরে পাঁচ শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। শেষ তিন মাসে এমন নিয়োগের সংখ্যা ১১৭। নিয়োগ পাওয়া বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আত্মীয়-স্বজন এবং শাখা ছাত্রলীগের সাবেক-বর্তমান নেতাকর্মী।
তবে চাকরির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মইনুল ইসলাম। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘গতবছরের ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪১তম সিন্ডিকেট সভায় মেরিন সায়েন্স বিভাগে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে আমার কিছু কর্মী উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও শাটল ট্রেন অবরোধ করে।
এ ঘটনায় আমাকে প্রধান অভিযুক্ত করে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমি এর আগে অনেকবার ম্যামকে অনুরোধ জানিয়েছি, ম্যাম ভুল করেছি, আমাকে ক্ষমা করে দেন। তদন্ত কমিটি থেকে নামটা বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু ম্যাম আমার কথা শোনেননি। সবশেষ বুধবার ম্যামের পায়ে ধরে বলেছিলাম, আপনি মায়ের মতো। আমাকে ক্ষমা করে দিন। কিন্তু ম্যাম শোনেননি।
এ বিষয়ে জানতে চবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ