সিপ্লাস ডেস্ক: রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় তেলাপোকা মারার ওষুধের ‘বিষক্রিয়ায়’ দুই শিশুর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ভাটারা থানায় ৫ জুন মামলা হয়। মামলায় ডিসিএস অর্গানাইজেশন লিমিটেড কোম্পানির চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান এবং কোম্পানিটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ফরহাদুল আমিনকে গ্রেফতার করে লালবাগ গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
ভাটারা থানা পুলিশের সহযোগিতায় দুই আসামির ভ্রাম্যমাণ অবস্থান শনাক্ত করে বৃহস্পতিবার সকালে নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হারুন অর-রশীদ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা টের পেয়ে দুজনই তাদের নিজস্ব গাড়িতে টাঙ্গাইল, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াতে থাকেন। এ কারণে তাদের ধরা সম্ভব হচ্ছিল না।
অর্থের লোভে কোম্পানির মালিক-কর্মচারীরা স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয় উপলব্ধি না করে এবং পরিবারের সদস্যদের যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার উপদেশ না দিয়েই কর্মচারীদের দিয়ে কীটনাশক স্প্রে করে; যার ফলশ্রুতিতে দুটি শিশু মারা যায় এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন পরিবারের অন্যরা।
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট সমৃদ্ধ ওই কীটনাশক বড় গার্মেন্টস, বীজ গুদাম, অনাবাসিক স্থান ছাড়া ঘর-গৃহস্থে ব্যবহার করা যায় না। ঘরবাড়িতে এগুলো ব্যবহার করলে ৭২ থেকে ৯৬ ঘণ্টা প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হয়।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে ওই বিষাক্ত উপাদান কোথা থেকে কিভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে, এর অনুমোদন ছিল কিনা, এর অনুপাত সঠিক ছিল কিনা, মানবদেহের জন্য এগুলো কতটা ক্ষতিকর তা যাচাই-বাছাই করা হবে।
ভিডিও কলে মারা যাওয়া দুই শিশুর বাবা মোবারক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ফুটফুটে দুই শিশুর এভাবে মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমি সুষ্ঠু বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
পুলিশ জানায়, গত ২ জুন বসুন্ধরার আই ব্লকের একটি নতুন বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিসের কর্মীরা তেলাপোকা মারার বিষ স্প্রে করেন। এর দুদিন পর ভুক্তভোগী পরিবারটি ওই বাসায় ওঠে।
বাসায় ঢুকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। পরে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রোববার ভোরে ৯ বছর বয়সি শাহিল মোবারত জায়ান এবং একই দিন রাত ১০টার দিকে ১৫ বছর বয়সি শায়েন মোবারত জাহিন মারা যায়।