চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চক্রান্ত এখনও শেষ হয়নি, ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। একজন নারী হয়ে আমি পাঁচবার ক্ষমতায় এসেছি, এটা অনেক দেশের পছন্দ না। এছাড়া আমাদের ভৌগোলিক অবস্থার কারণে অনেকের নজর আছে আমাদের ওপর। কাজেই এখানে বসে অন্য দেশের ওপর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাবে, এয়ার অ্যাটাক চালাবে সেটা আমি মেনে নেব না। দেশ হিসেবে আমরা ছোট হতে পারি। আমরা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। আমরা স্বাধীনভাবে চলব।
শনিবার টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনদের সঙ্গে শুভেচ্ছা এবং মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমেরিকার লজ্জা নেই, তারা কখন কাকে ক্ষমতায় নিয়ে আসে তার ঠিক নেই বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেরিকার গোয়েন্দার সাক্ষীতেই কিন্তু তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে। তবে এদের (আমেরিকার) লজ্জা নেই। এরা একজনকে এমন করবে, আবার কখন কাকে পছন্দ করে ক্ষমতায় নিয়ে আসে তার ঠিক নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নির্বাচন করবে না এটা আমরা জানি। কারণ, এরা (বিএনপি) যে নির্বাচন করবে তাদের নেতা কোথায়? একজন দুর্নীতি আর এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে সাজাপ্রাপ্ত, আরেকজন অর্থপাচার ও মানি লন্ডারিংয়ের মামলায়। এই যে দুর্নীতি আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই খুঁজে বের করেছে। তাদের (এফবিআই) গোয়েন্দার সাক্ষীতেই কিন্তু তারেক জিয়ার সাজা হয়েছে।
জনগণ আমাদের শক্তি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, চক্রান্ত ছিল আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেবে না। তাদের হুকুমের দাস এমন কাউকে বসাবে। তারপর এ দেশটাকে নিয়ে খেলতে পারবে। বাংলাদেশের জনগণ তার (ষড়যন্ত্রের) ভালো জবাব দিয়েছে। আমি নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল- ভোটার যেন আসে এবং প্রতিযোগিতা যেন হয়।
তিনি বলেন, আগুন দিয়ে পোড়ানো সবচেয়ে জঘন্য কাজ। এই যে রেলে আগুন দিয়ে মা ও শিশুকে যেভাবে পুড়িয়ে কঙ্কাল করল, যাত্রীসহ বাসে আগুন দেওয়া, ২০১৩ সালেও এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, ১৪-তে করল, ১৫-তে করল। এবার আবার শুরু করল।
সরকারপ্রধান বলেন, ২৮ অক্টোবর পুলিশকে যেভাবে পিটিয়ে মারা, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা জঘন্যতম কাজ করে তারা (বিএনপি) নিজেদের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এর আগে যতদিন শান্তিপূর্ণ মিছিল মিটিং করেছে আমরা বাধা দেইনি। তখন তাদের অবস্থা একটু ভালো ছিল। কিন্তু ২৮ অক্টোবরের ঘটনার পর তাদের আসল রূপ বের হয়ে আসে। তাদের সন্ত্রাসী চেহারাটা যখন জনগণ দেখল, অ্যাম্বুলেন্সে রোগী যাচ্ছে, সেই অ্যাম্বুলেন্সে আক্রমণ করে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ঢুকে পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ করল, সেখানে কতগুলো অ্যাম্বুলেন্স ভাঙল, পোড়াল, গাড়ি ভাঙল-পোড়াল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ হচ্ছে এই উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখা। জিনিসের দাম যেটা বেড়ে গেছে সেটা নিয়ন্ত্রণ করা, আমি গ্রাম-গঞ্জে খুব অসুবিধা দেখি না। কিন্তু যারা নিদিষ্ট আয়ের মধ্যে তাদের একটু সমস্যা। ঢাকার শহরে একটু বেশি। সেখানে জীবনযাত্রার ব্যয় সবসময় একটু বেশি। বাজারে কিন্তু জিনিসের অভাব নেই। খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু মনে হয়, যে কেউ জিনিসের দাম বাড়িয়ে মানুষকে হয়রানি করে। সেটাও আমাদের যথাযথভাবে নজরদারি বাড়াতে হবে। আর আমাদের খাদ্য উৎপাদনটা বাড়াতে হবে।
মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বশার খায়ের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ও তার স্ত্রী সাহানা ইয়াসমিন শম্পা, সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও সাবেক এমপি নাজমা আক্তার, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন প্রতিনিধি মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহাব উদ্দিন আজম প্রমুখ।
চাটগাঁ নিউজ/এমআর