আনোয়ারা প্রতিনিধি : টিআর কাবিখা ও কাবিটা সহ সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দে অনিয়ম, দুর্নীতি, সালিশ বাণিজ্যে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ এনে আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কলিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে অনাস্থা দিয়েছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের ১২ পুরুষ ও সংরক্ষিত নারী সদস্যরা।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তারা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চেয়ারম্যান পরিষদে কোনো সভা করেননি। ইতোমধ্যে সরকার এলজিএসপি-৩, ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা, টি.আর কাবিখা, কাবিটা, অতি দরিদ্র কর্মসংস্থান কর্মসূচি, এডিপি বরাদ্দসহ বিভিন্ন সময় নানান বরাদ্দ প্রদান করেছেন। কিন্তু চেয়ারম্যান ইউপি সদস্যদের কোন কিছু না জানিয়ে কোন প্রকার সভা না করে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন। অভিযোগে সালিশ বাণিজ্যের মাধ্যমে জনসাধারণের টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়ে চেয়ারম্যানের বিরূদ্ধে অভিযোগ করেন ইউপি সদস্যরা।
স্থানীয় সুত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান মো. কলিম উদ্দীন আওয়ামী লীগের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের অনুসারী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর সাবেক মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে ইউনিয়নে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ বিভিন্ন সালিশে অর্থ নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করতে থাকেন। এছাড়া তিনি অর্থ নিয়ে এক রোহিঙ্গা নারীকে জাতীয়তা সনদ ও জন্মসনদ সহ বিভিন্ন সুবিধাও দেন বলে জানান স্থানীয়রা।
হাইলধর ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. রিয়াজ উদ্দীন রাসেদ বলেন, জনগণের ভোটের আমরা পুরুষ নয়জন ও মহিলা তিনজন ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। কিন্তু পরিষদ গঠনের পর থেকে চেয়ারম্যান আমাদেরকে বিভিন্নভাবে বঞ্চিত করেছেন। সরকারের বিভিন্ন বরাদ্দ ইউপি সদস্যদের নিয়ে সভা না করে নিজের ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ করেন। এছাড়া বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, সরকারি চাউল ও কৃষি কার্ডসহ বিভিন্ন সরকারি ভাতা নিজের আত্মীয় ও পছন্দের মানুষকে দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে।
সংরক্ষিত নারী সদস্য সাজিয়া সুলতানা জানান, চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছে মতো কাজ করে স্বেচ্ছাচারিতার পরিচয় দিয়েছেন। বর্তমান এ দুঃসময়ে আমাদেরকে নিয়ে কোনো সভা করেনি। পরিষদেও আসেনি। চলতি মাসের ৫ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদের বিশেষ সাধারণ সভায় ইউপি সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে চেয়ারম্যান কলিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন জানান, হাইলধর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ লিখিত আকারে দিয়েছেন। তদন্তসাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাটগাঁ নিউজ/সাজ্জাদ/এআইকে