সিপ্লাস ডেস্ক: আইকনিক স্টেশন ও রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পূরণ হয়েছে কক্সবাজারবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। সেই সঙ্গে পর্যটকদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে রেল যোগাযোগ তৈরি হওয়ায়। তবে এর আগেই দোহাজারী-কক্সবাজার নতুন এই রেলপথের মধ্যবর্তী নয়টি স্টেশনের ভাড়া অনুমোদন করেছে রেলওয়ের মার্কেটিং বিভাগ।
ভাড়ার ওই তালিকায় দেখা যায়, ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সর্বনিম্ন ভাড়া হবে (নন এসি মেইল ট্রেনে) ১২৫ টাকা এবং সর্বোচ্চ ভাড়া ওই ট্রেনের এসি বার্থে জনপ্রতি ১ হাজার ৭২৫টাকা।
বর্তমানে ট্রেনে প্রতি কিলোমিটারের জন্য এসি শ্রেণির নির্ধারিত ভাড়া ১ টাকা ৯৫ পয়সা এবং নন এসি শ্রেণির জন্য ১ টাকা ১৭ পয়সা। তবে দেশে চালু থাকা লোকাল, মেইল, কমিউটার ও আন্তঃনগর এই চার রকম ট্রেনের জন্য ভাড়ার হারে কিছুটা তারতম্য আছে।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার ৫৩৫ কিলোমিটারের এ পথে লোকাল ট্রেনের জন্য (দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৫ টাকা। মেইল ট্রেনে এই ভাড়া হবে ১৭০ টাকা এবং কমিউটার ট্রেনের ক্ষেত্রে ২১০টাকা। এ ছাড়া সুলভ শ্রেণির আসনের ভাড়া হবে ২৫০ টাকা, শোভন শ্রেণির ভাড়া ৪২০ টাকা, শোভন চেয়ারের ভাড়া ৫০০ টাকা এবং প্রথম চেয়ার (সিটের) ভাড়া ৬৭০ টাকা। আন্তঃনগর ট্রেনে প্রথম বার্থের টিকিট ১০০০ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ভাড়া ৯৬১ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ১১৫০ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া জনপ্রতি ১৭২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেলপথের বাণিজ্যিক দূরত্ব ১৮৯ কিলোমিটার। বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে ট্রেনে এখন পর্যটন নগরী কক্সবাজার যেতে সর্বনিম্ন ভাড়া পড়বে ৫৫ টাকা, আর সর্বোচ্চ ৬৯৬ টাকা।
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত লোকাল ট্রেনের জন্য (দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ টাকা। মেইল ট্রেনে এই ভাড়া হবে ৭০ টাকা এবং কমিউটার ট্রেনের ক্ষেত্রে ৮৫টাকা। এ ছাড়া সুলভ শ্রেণির আসনের ভাড়া হবে ১০৫ টাকা, শোভন শ্রেণির ভাড়া ১৭০ টাকা, শোভন চেয়ারের ভাড়া ২০৫ টাকা এবং প্রথম চেয়ার (সিটের) ভাড়া ২৭০ টাকা। আর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে আন্তঃনগর ট্রেনে প্রথম বার্থের টিকিট ৪৬৬ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ভাড়া ৩৮৬ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ৪৬৬ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া জনপ্রতি ৬৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
রামু থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার পথে লোকাল ট্রেনের জন্য (দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ টাকা। সর্বোচ্চ এসি বার্থে ১৫০ টাকা। ইসলামাবাদ থেকে কক্সবাজার (দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ টাকা। সর্বোচ্চ এসি বার্থে ১৫০ টাকা। দুলাহাজরা থেকে কক্সবাজার (দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ টাকা। সর্বোচ্চ এসি বার্থে ২০২ টাকা।
চকরিয়া থেকে কক্সবাজার (দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। সর্বোচ্চ এসি বার্থে ২৭১ টাকা। হারবাং থেকে কক্সবাজার (দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। এসি বার্থে সর্বোচ্চ ৩৬৮ টাকা। লোহাগড়া থেকে কক্সবাজার (দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ টাকা। সর্বোচ্চ এসি বার্থে ৪২৬ টাকা। সাতকানিয়া থেকে কক্সবাজার (দ্বিতীয় সাধারণ শ্রেণির) ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ টাকা। সর্বোচ্চ এসি বার্থে ৪৭৮ টাকা।
নতুন নির্মিত দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১৩৯ কিলোমিটার রেলপথ ট্রেনে অতিক্রম করতে লোকাল ট্রেনের ভাড়া পড়বে মাত্র ৪০ টাকা। মেইল ট্রেনে তা ৫৫ টাকা এবং কমিউটার ট্রেনে সেই ভাড়া ৬৫ টাকা।
সুলভ শ্রেণির আসনের ভাড়া হবে ৮০ টাকা, শোভন শ্রেণির ভাড়া ১৩০ টাকা, শোভন চেয়ারের ভাড়া ১৫৫ টাকা এবং প্রথম চেয়ার (সিটের) ভাড়া ২৩৬ টাকা।
আর দোহাজারী-কক্সবাজার রুটে আন্তঃনগর ট্রেনে প্রথম বার্থের টিকিট ৩৫৭ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ভাড়া ২৯৯ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ৩৫৭ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া জনপ্রতি ৫৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন শেষে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে এই রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করবে। দিনে একটি ট্রেন ঢাকা থেকে রাত সাড়ে ১০টায় যাত্রা করে ঢাকা বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে বিরতি দিয়ে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। কক্সবাজার থেকে দুপুর ১টায় যাত্রা করে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় ফিরবে। ফিরতি পথেও চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করবে।
১৫টি বগি নিয়ে ঢাকা থেকে যাত্রার সময় এই ট্রেনে আসন সংখ্যা হবে ৭৯৭টি। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা নতুন আধুনিক কোচ দিয়ে লাল-সবুজ রঙে সাজানো হয়েছে ট্রেনটি।