ডা. শাহাদাত জনগণের রায়ে মেয়র হলে খুশি হতাম : শাহজাহান চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক : নগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন কোর্টের রায়ে মেয়র না হয়ে জনগণের রায়ে মেয়র হলে আমি খুব খুশি হতাম। তিনি যেভাবে মেয়র হওয়ার জন্য তৎপর সেভাবে যদি দ্রুত  নির্বাচন দেয়ার জন্য তৎপর হতেন আমার ভালো লাগতো বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগর আমীর শাহজাহান চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাত ১০টায় সিপ্লাস টিভির এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই মন্তব্য করেন। যেটি সঞ্চালনা করেন সিপ্লাস টিভির সম্পাদক আলমগীর অপু্।

সাক্ষাৎকারে শাহজাহান চৌধুরী দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট, রাজনীতি, ধর্ম, নির্বাচন, চট্টগ্রামের ভাষা ও সংস্কৃতি এবং জামায়াতে ইসলামীর ভবিষ্যৎ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, শাহাদাত সাহেব খুবই সজ্জন ব্যক্তি। তিনি নিশ্চই মেয়র হিসেবে যোগ্য লোক। তবে এভাবে মেয়র হওয়াটা ওনার উচিত হয়নি। তিনি যদি নির্বাচন করে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে মেয়র হতেন তবে আমি খুব খুশি হতাম।

নির্বাচন প্রসঙ্গে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, এ মুহূর্তে আমরা নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। ড. ইউনূস সরকারের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা ও সমর্থন রয়েছে। তিনি চট্টগ্রামের মানুষ এটা ভেবেও ভালো লাগছে। ওনার সরকারের সকলে আন্তরিকতার সাথে দিনে রাতে কাজ করে যাচ্ছে দেশটাকে সংস্কার করার জন্য। তাই আমরা তাড়াহুড়ো করতে চাচ্ছি না।

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে নগর জামায়াতের এই আমীর বলেন, নিত্যপণ্যের বাজার এখনও সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি। সিন্ডিকেটের কালো হাত ভেঙ্গে দিতে হবে। ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ হলেই দ্রব্যমূল্যও সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

জামায়াতে ইসলাম একক নির্বাচন করবে কিনা এমন প্রশ্নে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, জামায়াতে ইসলাম একটি রূহানী সংগঠন। এখানে আমরা মানুষকে নামাজি বানায় , আল্লাহভীতি সৃষ্টি করি ও ন্যায়-নীতি ও ইনসাপ শেখায় । এই সংগঠন শুধু রাজনীতি করে না তারা মানুষকে আল্লাহওয়ালা বানায়। সুতরাং জামায়াতে ইসলাম ক্ষমতায় গেলে দেশে ইনসাপ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ন্যায়ের রাষ্ট্র গঠনের ভূমিকা রাখবে।

তরুণ সমাজের রাজনীতি বিমুখতা নিয়েও কথা বলেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের জনপ্রিয় এই নেতা।  তিনি বলেন, এই তরুণ সমাজ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যায়, দুর্নীতি, অনিয়ম-অবিচার দেখে বড় হয়েছে। তারা দেখেছে কিভাবে একজন রাজনীতিবিদ দেশের মানুষকে শোষণ করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। তাই তরুণ সমাজও এসব দেখে দেখে রাজনীতি বিমুখ হয়েছে। তবে এখন তারা রাজনৈতিক সচেতন। রাজনৈতিক সচেতন বলেই এতবড় একটা অভ্যুত্থান সফল করতে পেরেছে। প্রায় দেড় হাজার ছেলে বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছে কেবল দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করার উদ্দেশ্যে। আমি তাদের এই আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা করি। তারা নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। তাদেরকে নিয়েই  আমরা সুন্দর একটি দেশ গঠন করতে চাই।

সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাবেক এই এমপি চট্টলার জনপ্রিয় নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে নিয়েও কথা বলে সাক্ষাৎকারে। যেখানে তিনি মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাথে তার সুসম্পর্ক ও ঘনিষ্টতা তুলে ধরে বলেন, তিনি একজন সত্যিকারের গণমানুষের নেতা ছিলেন। এই চট্টগ্রাম নিয়ে ওনার অবদান  অনস্বীকার্য। ওনার বাসায় আমার যাতায়াত ছিল। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও কখনো ভাত খাওয়া ছাড়া বের হতে দিতো না।

চট্টগ্রামের ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়েও কথা বলেন শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ভাষা বেশ সমৃদ্ধ। এখানকার সংস্কৃতিও বৈচিত্রে ভরপুর। এই ভাষায় আমিও বিভিন্ন সভা, সেমিনার এবং সমাবেশে  কথা বলতে স্বাচ্ছ্যন্দবোধ করি। আমার এই মাতৃভাষাতেই কথা বলতে বেশি ভালো লাগে। অনেক লেখক বুদ্ধিজীবী চট্টগ্রামের ভাষার উপর গবেষণা করেছেন। আমি গর্ব করেই বলি আমি একজন চাটগাঁইয়া সন্তান।

পরিশেষে তিনি সিপ্লাসটিভি ও চাটগাঁ নিউজের প্রধান সম্পাদক আলমগীর অপুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দর্শকদেরও ধন্যবাদ জানান।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ/এসএ

 

Scroll to Top