চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে চায় ভারতের যোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক সংসদীয় কমিটি। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এ কথা জানিয়েছেন সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান নিশিকান্ত দুবে।
সমন জারির উদ্দেশ্য হলো, এক মন্তব্যের জেরে মেটা কর্তৃপক্ষকে ভারতের সংসদের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা। খবর এনডিটিভির।
এক্স-এ এক পোস্টে দুবে বলেন, ভুল তথ্য একটি গণতান্ত্রিক দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। এই ভুলের জন্য সংস্থাটিকে সংসদ এবং এখানকার জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
দুবে জাকারবার্গের যে ভুলের প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেছেন তাও জানিয়েছে এনডিটিভি। তাদের প্রতিবেদন মতে, সম্প্রতি এক পডকাস্টে সাক্ষাৎকার দেন জাকারবার্গ। এক পর্যায়ে তিনি করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সরকারের ওপর থেকে মানুষের আস্থা সরে যাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন। এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, করোনা পরবর্তী প্রভাব ২০২৪ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পড়েছে। এ বছর বড় বড় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের মতো বিভিন্ন দেশে নির্বাচন হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ক্ষমতাসীন দলগুলো হেরে গিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুদ্রাস্ফীতি, করোনা মোকাবিলায় আর্থিক নীতি, মহামারি মোকাবিলার পদ্ধতি বা যে কারণেই হোক না কেন- বিশ্বব্যাপী একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
ভারতীয় নেতারা এ মন্তব্য ভালোভাবে নেননি। তারা বলছেন, ভারতে এমনটি ঘটেনি। এ দেশে নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয়ী হয়েছে। এতে সরকারের ওপর জনগণের আস্থা প্রমাণিত হয়। কিন্তু জাকারবার্গ ভারতের নাম উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।
প্রসঙ্গত, ইন্টারনেট চালান অথচ ফেসবুকের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। ২০০৪ সালে কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে মিলে ফেসবুক বানান জাকারবার্গ। প্রতিষ্ঠার এক বছর পরই ১০ লাখ ব্যবহারকারী ফেসবুকে যোগ দেয়।
এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি জাকারবার্গকে। রাতারাতি সব সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মকে পেছনে ফেলে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিণত হয় ফেসবুক।
জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠান বড় করা হয়। তখন ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আল্টোতে ফেসবুকের কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে শুরুর বছরগুলোতেই বিপদে পড়েছিল ফেসবুক। ২০০৬ সালে জাকারবার্গের সাবেক সহপাঠী ক্যামেরুন ও টেইলার উইকলভস এবং দিব্যা নরেন্দ্র, তার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়। এই তিনজনের দাবি ছিল, তাদের আইডিয়া চুরি করেছেন জাকারবার্গ। পরে ৬৫ মিলিয়ন ডলারে সেই মামলা রফাদফা হয়।
ই-মেইল অ্যাকাউন্ট থাকা ব্যক্তিদের জন্য ২০০৭ সালে ফেসবুক উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। অর্থাৎ ই-মেইল অ্যাকাউন্টধারী যে কেউ চাইলেই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারত। কয়েক বছরের ব্যবধানে কোটি কোটি ব্যবহারকারী ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলে। ২০২১ সালে সাহসী এক পদক্ষেপ নিয়ে ফেসবুকের নাম পরিবর্তন করে করা হয় মেটা।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ