ছাত্রদের উপর হামলার নির্দেশদাতা জাহাঙ্গীর ধরা ছোঁয়ার বাইরে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম নগরীর শাহ আমানত ব্রীজে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার নির্দেশদাতা ছিলেন বক্সিরহাট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম। তিনি উক্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাজি নুরুল হকের পুত্র। দাপুটে এই নেতার বিরুদ্ধে নাশকতায় অর্থ যোগান সন্ত্রাসী লালনের অভিযোগ রয়েছে। নেতৃত্ব দিতেন বক্সিরহাট টেরিবাজার চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আছাদগঞ্জ চর চাক্তাই পাথরঘাটা চামড়ার গুদাম শুটকিপট্টি বেড়ামার্কেট শাহ আমানত ব্রীজ বাকলিয়া বাস্তুহারা ক্ষেতচরসহ বাকলিয়ার বিস্তৃত এলাকায়।

আওয়ামী লীগ নেতার পাশাপাশি তিনি পরিচয় দিয়ে থাকেন বড় মাপের একজন ব্যবসায়ী। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের একদিন আগে ৪ আগস্ট শাহ আমানত ব্রীজে ছাত্রলীগ যুবলীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর এই হামলা চালায়। হামলায় যোগ দেয় পাশের বাস্তুহারা কলোনীর সোহেল কুটুম মো.ফারুক বেড়িবাঁধের আজমির, হাবিব (পটিয়া) কোরবান আলী রবিউল প্রকাশ বগা রুবেল মাছ সালাউদ্দীন কানা মাহমুদ ও কিশোর কানা মাহমুদ ও কিশোর গ্যাং লিডার রাসেলসহ শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী।

হামলায় অর্ধশতাধিক ছাত্রজনতা আহত হন। মারা গেছেন দু’জন। এদিন তারা ট্রাফিক ও থান্য পুলিশ বক্সসহ বহু প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর লুটতরাজ চালায়। বাস্তহারা এলাকার সালাউদ্দীন এর অফিসে লুটপাট ও দোকান ভাংচুর করা হয় পরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও দখল করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। পুলিশ বিজিবির সামনে এই তান্ডব চালানো হয় বলে জানা গেছে।

এসব অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর মধ্যে একজনও গ্রেফতার হয়নি উদ্ধার করা হয়নি অস্ত্রশস্ত্রও। বরং তারা বহাল তবিয়তে থেকে নানাজনকে হুমকি ধমকিও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগে জানায় স্থানীয়রা। তারা এলাকায় সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিতি।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, নগরীর প্রবেশপথ শাহ আমানত ব্রীজে বশিরুজ্জামান চত্বরে সকাল থেকে শতশত কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা জমায়েত হন। এসময় সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। এদিন ছাত্রজনতা শাহ আমানত ব্রীজ এলাকায় অবস্থান নিয়ে সরকার পতনের লক্ষ্যে মিছিল সমাবেশ ও বিভিন্ন শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তোলেন। হঠাৎ আবদুল্লাহ আল নোমান কলেজের পূর্ব পাশের বাস্তহারা কলোনী ও ক্ষেতচর ও আশপাশ এলাকা থেকে কয়েকশ’ যুবক সোহেল কুটুম ও ফারুকের নেতৃত্বে লাঠি রাম দা কিরিচ ও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে মিছিল করে সামনে এগিয়ে আসতে থাকে। সেসময় উপস্থিত অনেকে ভয়ে আতঙ্কে বিভিন্ন দিকে ছোটাছুটি করতে থাকেন। সন্ত্রাসীরা জয়বাংলা ও শেখ হাসিনার নামে শ্লোগান দিয়ে একযোগে হামলা ও গুলি বর্ষন শুরু করে। ছাত্র জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে চেষ্টা চালায়। অনেকে আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এই লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন ব্যবসায়ী এলাকার লোকজন। এই হামলার নির্দেশদানকারী ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম। সন্ত্রাসীরা তার নির্দেশেই মেতে উঠে উল্লাসে এরপর শুরু হয় হামলা ও গুলিবর্ষনের ঘটনা।

স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘটনার দিন হামলায় জড়িত একজন সন্ত্রাসীকেও আজো গ্রেফতার করা হয়নি। নিরবতা পালন করে যাচ্ছে আইনশৃংখলাবাহিনী। উদ্ধার করা হয়নি একটি অস্ত্রও। তারা বাস্তহারা কলোনী এবং এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরাফেরা করছে। দখলবাজি সন্ত্রাস চাঁদাবাজিসহ এমন কোন হেন কাজ নেই যা তারা করেনি। সরকার পরিবর্তন হলেও অনেকে ভয়ে আতঙ্কে আছেন বলে জানিয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/এআইকে

Scroll to Top