ছাত্রদলের অভিযোগের তীর শিবিরের দিকে— মিডিয়ার ‘মিথ্যা প্রচার’ বলছে শিবির

চট্টগ্রাম কলেজে মারধর

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে মেয়েদের সাথে কথা বলার অপরাধে পাঁচ ছাত্রদল কর্মীর উপর দুই দফায় হামলার ঘটনা নিয়ে ভুক্তভোগীরা সরাসরি শিবিরকে দোষ দিলেও শিবির এটাকে ‘মিডিয়ার মিথ্যা প্রচার’ বলছে। তারা বলছে, এই ঘটনার সাথে তাদের কোনো সম্পর্কই নেই।

তবে যে হামলার ঘটনা নিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ রীতিমত অধ্যক্ষের দুয়ারে আবেদন নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। একদিনের ব্যবধানে তারাও কেমন যেন চুপসে গেলেন। মার খেয়ে ছাত্রদলের এমন চুপসে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি পাড়ায় ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

কেউ মনে করছেন, চট্টগ্রাম কলেজে শিবিরের প্রভাব বেশি। সেখানে ছাত্রদলের কর্তৃত্ব সৃষ্টি করতে হলে কেন্দ্রীয় রাজনীতিও জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিষয়টি বেশিদূর না গড়িয়ে শুরুতেই দফারফায় পক্ষপাতী উভয়পক্ষ।

আবার কেউ কেউ মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এই সময়ে চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদল নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কেননা এই প্রতিষ্ঠানে সংগঠনটির তেমন প্রভাব বলতে গেলে আজ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। তাই সংঘবদ্ধ হয়ে ধীরে ধীরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত করার পরিকল্পনা ছিল ছাত্রদলের।

হামলার বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষের বরাবর আশরাফ হোসেনের লিখিত অভিযোগে উল্লেখিত নম্বরে চাটগাঁ নিউজ প্রতিবেদক যোগাযোগ করলে, তিনি হামলার ঘটনা নিয়ে ফোনে কোনো কথা না বলে, সরাসরি কথা বলতে চান বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

তবে হামলা ঘটনা নিয়ে ছাত্র শিবিরের পক্ষ থেকে এই ঘটনা মিডিয়ার মিথ্যা প্রচার এবং এর সাথে ছাত্র শিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই বলে প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তরের প্রচার সম্পাদক সালাউদ্দিন আকাশের পক্ষ থেকে এই প্রতিবাদ পাঠানো হয়।

প্রতিবাদে উল্লেখ করা হয়- ‘২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের সাথে সংঘটিত ঘটনার প্রেক্ষিতে কিছু সংবাদমাধ্যম ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা আমাদের নজরে এসেছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে যে ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে, তার সাথে শাখা সভাপতির কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। তিনি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় একটি প্রোগ্রামে অংশ নিতে কয়েকদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন, যা চট্টগ্রাম প্রশাসনও অবগত।’

এই নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি ফখরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি তানজীর হোসাইন জুয়েল বলেন, ছাত্রসংগঠনগুলোর সাথে পরিকল্পিতভাবে দুরত্ব তৈরি করার জন্য একটি কূটকৌশল চালানো হচ্ছে। ছাত্রশিবিরের মতো সুশৃঙ্খল ও আদর্শিক সংগঠনের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যেই এই মিথ্যা প্রতিবেদন করা হয়েছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রদলের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এই মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডার মাধ্যমে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমগুলোকে ভবিষ্যতে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে সংবাদ প্রকাশের আহ্বান জানাই।

২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে মেয়েদের সাথে কথা বলার দোষ দেখিয়ে কতিপয় ছাত্রদল কর্মীর উপর হামলা চালায় ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীরা। হামলায় ছাত্রদল কর্মী আশরাফ হোসেন, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল করিম আরিয়ান, শরীফুল ইসলাম আবির, আজিজুল হক নাঈম ভূইয়া ও শোয়াইবুল ইসলাম আহত হন। তবে আহত নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও ঘটনার পরদিনই ছাত্র শিবিরের পক্ষ থেকে ‘বিষয়টি মিথ্যা প্রচারণা এবং ঘটনার সাথে শিবিরের সম্পর্ক নেই’ বলে প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/উজ্জ্বল/এসএ

Scroll to Top