চার নারী সেনার বিনিময়ে ২০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে দ্বিতীয় দফায় ইসরায়েলি জিম্মি চার নারী সেনাকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। গাজায় আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রসের হাতে তুলে দেওয়া নারী সেনারা শনিবার ইসরায়েলে পৌঁছেছেন। এই জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ২০০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে ইসরায়েল।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার সকালের দিকে গাজা নগরীতে এক অনুষ্ঠানে ইসরায়েলি চার জিম্মিকে নিয়ে আসা হয়। এ সময় তাদের হাস্যোজ্জ্বল ও হাত নাড়িয়ে আনন্দ প্রকাশ করতে দেখা যায়।

ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির এই অনুষ্ঠানস্থলে হামাস ও ইসলামিক জিহাদের সশস্ত্র সদস্যদের দেখা যায়। পরে রেডক্রসের প্রতিনিধিদের হাতে তাদের তুলে দেওয়া হয়। সেখান থেকে রেডক্রসের সদস্যরা এই জিম্মিদের নিয়ে ইসরায়েলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, গাজায় হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি চার জিম্মি ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। এই তথ্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, গাজায় মুক্তি পাওয়া চার জিম্মিকে পেয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। গাজায় ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

মুক্তি পাওয়া চার ইসরায়েলি সেনা হলেন, কারিনা আরিয়েভ, ড্যানিয়েলা গিলবোয়া, নামা লেভি এবং লিরি আলবাগ। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধাদের গাজা সীমান্তের কাছে ইসরায়েলি একটি সামরিক ঘাঁটি ধ্বংস করেন। পরে সেখান থেকে ইসরায়েলি এই চার নারী সৈন্যকে ধরে নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা।

হামাস বলেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে শনিবার ২০০ বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। তাদের মধ্যে ইসরায়েলের আদালতে দোষী সাব্যস্ত হামাস যোদ্ধারাও রয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই হামলায় নিহত হয় অন্তত ১ হাজার ২০০ জন, পাশাপাশি ২৫০ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় যোদ্ধারা।

এ হামলার জবাব দিতে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। প্রায় ১৫ মাস স্থায়ী হওয়া সেই অভিযনে গাজায় নিহত হয়েছেন ৪৭ হাজার ৩০০ জন ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ১১ হাজার ৫০০ জন। এছাড়া এখনও নিখোঁজ আছেন অন্তত ১১ হাজার মানুষ।

কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের মধ্যস্থতায় গত রোববার (১৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ১১টার দিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। প্রথম দফায় তিন নারী জিম্মিকে ছেড়ে দেয় হামাস। যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম দিনেই ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়; যাদের সবাই নারী বা শিশু।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি 

Scroll to Top