চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জিওন মোহাম্মদ নামে সাবেক এক শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে মারধর ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১০ জুন) বেলা দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীর জিওন মোহাম্মদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। বর্তমানে তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্রে এমফিল করছেন।
অপহরণের ঘটনায় অভিযুক্ত নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপপক্ষ সিক্সটি নাইনের নেতা-কর্মী। তারা ক্যাম্পাসে নিজেদের সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী জিওন মোহাম্মদ জানান, দুপুর ১২টার দিকে জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্রে গিয়ে ছাত্রলীগের এক কর্মী তার খোঁজ নেন। ওই কর্মী নিজেকে পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গে গবেষণা করতে আগ্রহ জানান। তিনি বিষয়টি ভেবে পরে জানাবেন বলে ওই কর্মীকে জানিয়েছিলেন। পরে বেলা দেড়টার দিকে গবেষণাকেন্দ্র থেকে বের হয়ে জিরো পয়েন্টে যাওয়ার জন্য রিকশায় ওঠেন। রিকশাটি প্রীতিলতা হলের কাছে এলে ওই ছাত্রলীগ কর্মীসহ আরও ছয় থেকে সাতজন তার পথ আটকান। এসময় রিকশা থেকে নেমে তাকে তাদের সঙ্গে যাওয়ার কথা বলেন। তবে ওই নেতা-কর্মীদের উগ্র আচরণ দেখে সন্দেহ হওয়ায় তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে তাকে ধাওয়া দিয়ে ধরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে নিয়ে যান।
জিওন মোহাম্মদ বলেন, ছাত্রলীগের ওই কর্মী দুপুরের দিকে গবেষণাকেন্দ্রে এসেছিলেন মূলত তার পরিচয় আর অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার জন্য। খেলার মাঠে নিয়ে গিয়ে তাকে মারধর করে সঙ্গে থাকা আড়াই হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন ছাত্রলীগের ওই নেতা-কর্মীরা। তার বিকাশে থাকা এক হাজার টাকাও নিয়ে নেওয়া হয়। তার বাবাকে ফোন করেও টাকা দাবি করা হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা আটক থাকার পর ছাত্রলীগের এক জ্যেষ্ঠ নেতা তাকে উদ্ধার করে প্রক্টর কার্যালয়ে নিয়ে যান।
জিওন মোহাম্মদ আরও বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তার বিরুদ্ধে ফেসবুকে সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখির অভিযোগ এনেছেন। পুলিশে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন। কিন্তু তিনি ফেসবুকে কিছু লেখেননি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ অহিদুল আলম বলেন, বেলা দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ফোন দিয়ে প্রীতিলতার হলের পাশে একজনকে মারধর করা হচ্ছে বলে তাঁকে জানান। খবর পেয়ে তিনি সেখানে গেলেও কাউকে পাননি। পরে বিষয়টি সহকারী প্রক্টররা দেখভাল করেছেন।
জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর হেলাল উদ্দিন আহম্মদ জানান, সাবেক ওই ছাত্রের কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শুনেছেন তিনি। তাকে শারীরিক লাঞ্ছনার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন। খতিয়ে দেখে কাউকে দোষী পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ