চন্দনাইশ প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার শর্মি পালিত চৌধুরীর বিরুদ্ধে দিনের অফিস রাতে করাসহ দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, চন্দনাইশবাসী যখন ঘুমোতে যান, সাব–রেজিস্ট্রার অফিসার তখন জেগে উঠেন। আর রাতের আঁধারে চলে অবৈধ বাণিজ্য।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরকার নির্ধারিত অফিস সময়কে উপেক্ষা করে সাধারণ জনগণকে জিম্মি করে রাত ১১টা পর্যন্ত চলছে রেজিস্ট্রী কার্যক্রম। যে সময় সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ হয়ে যায়, সে সময় শুরু করেন শর্মি পালিতের রেজিস্ট্রী কার্যক্রম। এ যেন এক মঘের মুল্লুক। কথায় কথায় ক্ষমতা জাহির করেন তিনি।
ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেন, দিনের রেজিস্ট্রী রাতে করায় দূরদূরান্ত থেকে দাতা ও গ্রহীতাদের দুর্ভোগের অন্ত নেই। ব্যাংক টাইমের সাথে রেজিস্ট্রী অফিসের সময়ের মিল না থাকায় ব্যাংক ড্রাফট করতে না পেরে অনেকেই নির্ধারিত দিনে রেজিস্ট্রী করতে পারছেন না। এছাড়া অফিস ডেকোরেশনের নামে রেজিস্ট্রারিতে দলিলপ্রতি ৩০-৪০ হাজার টাকা আন-অফিসিয়ালি আদায় করার অভিযোগ করেন দলিল লেখকরা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে কিছু অফিস রুম বন্ধ করেতে ব্যস্ত হয়ে যায়। সামনে রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের পরিবর্তে ভেতরের গোপন রুমে (খাশ কামরায়) রেজিস্ট্রি কার্যকলাপ চালাতে দেখা যায়।
এসময় সাব-রেজিস্ট্রার শর্মি পালিত চৌধুরীর কাছে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি অন্তঃসত্ত্বার অসুস্থতার অজুহাত দেখান। সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরের এক পর্যায়ে সেখানে অবস্থান করা সুবিধাভোগী কয়েকজন দালাল তার পক্ষে সাফাই গেয়ে সাংবাদিকদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিষয়টিকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করেন। পরে জানা যায় এরা দলিল লেখক কিংবা অফিসের কেউ নন। এসব দালালদের নিয়ন্ত্রণে অফিসের ঘুষ লেনদেন কার্যকলাপ চলে।
জমি রেজিস্ট্রি করতে আসা ভুক্তভোগিরা বলেন, দুপুর একটায় এসেছি, এখন রাত ৮টা বাজে। এখনো রেজিস্ট্রি করতে পারিনি। আরও কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে জানিনা।
এ বিষয়ে চন্দনাইশ দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, চন্দনাইশ গাছবাড়িয়া সাব-রেজিস্ট্রার ম্যাডাম ২০২২ সালে ২৩ মার্চ জয়েন করেন। তিনি নিজেকে সাব-রেজিস্ট্রার পরিচয় না দিয়ে জজ পরিচয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফখরু উদ্দীন জানান, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে দালালের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। এটা ঠেকানোর জন্য দলিল লেখক সমিতি যা যা করণীয় সব করবে।
সিনিয়র দলিল লেখক মো. করিম অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান সাব-রেজিস্ট্রার অফিসার আসার পর থেকে প্রায় দুই বছর ভোগান্তির শেষ নেই। প্রথম ভোগান্তি হল আমাদের সবাইকে দরজার বাহিরে বের করে দিয়ে তিনি দরজার ভেতরে বসে থাকেন।তার কাছে আমাদের কোনো ধরণের মূল্য নেই।
চাটগাঁ নিউজ/এমআর/এসএ