চট্টগ্রামের স্বপ্নভঙ্গ: আবারও চ্যাম্পিয়ন তামিমের বরিশাল

ক্রীড়া ডেস্ক: শ্বাসরূদ্ধকর এক ফাইনাল। ১৯৫ রানের লক্ষ্য। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৮ রান। বোলার হোসাইন তালাত। উইকেটে ছিলেন রিশাদ হোসেন আর এবাদত হোসেন। প্রথম বলেই লং অনের ওপর দিয়ে সোজা ছক্কা মেরে দিলেন রিশাদ হোসেন।

পরের বলে একটি সিঙ্গেল এবং একটি ওয়াইড। তিন বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নিলো ফরচুন বরিশাল। টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হলো তামিম ইকবালের দল। অপরদিকে স্বপ্ন ভঙ্গ হলো চট্টগ্রামের।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে চিটাগং কিংস। জবাবে ১৯.৩ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টিম বরিশাল।

কাইল মায়ার্স আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন, ততক্ষণ বরিশাল সমর্থকদের মধ্যে হতাশা ভর করার মত কোনো বিষয়ই ছিল না; কিন্তু ১৮তম ওভারে এসে বরিশালের সাজানো বাগান তছনছ করে দিতে চেয়েছিলেন শরিফুল ইসলাম। বাঁ-হাতি এই পেসারের বলে আউট হয়ে যান মায়ার্স-মাহমুদউল্লাহ দু’জনই।

২৮ বলে ৪৬ রান করা মায়ার্স অনায়াসেই বরিশালকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিচ্ছিলেন; কিন্তু ১৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বদলি ফিল্ডার মার্শাল আইয়ুবের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। ৩টি বাউন্ডারি ও ৩টি ছক্কার মার ছিল মায়ার্সের ইনিংসে।

এক বল বিরতি দিয়ে শরিফুল তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উইকেটও। তিন বলে ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়ে চিটাগং কিংসের সামনেও জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি করেন শরিফুল।

তবে শেষ মুহূর্তে বরিশালের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন রিশাদ হোসেন। এই লেগ স্পিনার ব্যাট হাতেও হাত খুলে শট খেলতে পারেন। যার প্রমাণ দিলেন আজকে। ১৯তম ওভারে বিনুরা ফার্নান্দোকে একটি ছক্কা মেরে দেন রিশাদ। পরের বলেই নেন ৩ রান। যদিও ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ নবি আউট হয়ে টানটান উত্তেজনা তৈরী করেন শেষ মুহূর্তে।

তবুও শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে মাত্র ৮ রান। হুসাইন তালাতের কাছ থেকে প্রথম বলেই ছক্কা মেরে রিশাদ জয়ের আসল কাজটা শেষ করে দেন। ওভারের ৩য় বলে গিয়ে জয় তুলে নেয় বরিশাল।

১৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বরিশালের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং তাওহিদ হৃদয় আত্মবিশ্বাস দৃঢ় করে দিয়ে যান পরের ব্যাটারদের। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫৭ রান তোলেন তারা। উইকেট ভাঙে ৮.১ ওভারে। ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে জমা হয়ে যায় ৭৮ রান।

তাওহিদ হৃদয় ২৮ বলে ৩২ রান করে আউট হন। তামিম ইকবাল সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেন, ২৯ বল খেলে। ৯টি বাউন্ডারির সঙ্গে ১টি ছক্কার মার মারেন তিনি। কাইল মায়ার্স ২৮ বলে করেন ৪৬ রান। রিশাদ ৬ বল খেলে অপরাজিত থাকলেন ১৮ রান করে।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে চিটাগং কিংস সংগ্রহ করে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান। পারভেজ হোসেন ইমন খেলেন ৪৯ বলে ৭৮ রানের ইনিংস। ৪৪ বলে ৬৬ রান করেন খাজা নাফে। ৪৪ রান করেন গ্রাহাম ক্লার্ক। তাতেই শক্তপোক্ত ভিত্তি পেয়ে যায় চট্টগ্রামের দলটি। কিন্তু বিপরীত দলের অধিনায়ক যখন চট্টগ্রামের ছেলে তামিম ইকবাল খান তখন তার সমর্থকরা ধরেই নিয়েছিল আজ তামিম ভালো খেলেই দলকে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নের স্বাদ দিবেন।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top