সিপ্লাস ডেস্ক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বন্দি করা হয়েছিল ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে। এখনও তিনি বন্দী। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। তার কিছু হলে সরকারকে সম্পূর্ণ দায় দায়িত্ব নিতে হবে।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে পদযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার দাবিতে এ পদযাত্রার আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়া গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে এসেই গণতন্ত্রের জন্য লড়াই শুরু করেন, যা এখনও চলছে। তিনি হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা তথা চারণ কবির মতো দেশের মানুষকে গণতন্ত্রের পক্ষে জাগ্রত করে চলছেন। তাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। যে দুই কোটি টাকার অভিযোগে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে সে টাকা এখন ৮ কোটি টাকা হয়েছে। একই ধরনের মামলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতার বিরুদ্ধে হয়েছিল। কিন্তু তাদের শুধু মুক্তি দেওয়া হয়নি, মামলাও তুলে নেওয়া হয়েছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এরা অসাংবিধানিক ও অবৈধ সরকার। তারা ১৫ বছর ধরে জনগণের কাঁধে চেপে বসেছে। এরা এখন গণতন্ত্রের জন্য নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। দেখেন আমাদের ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মমিনুল হক জিসানসহ ৬ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছয় ঘণ্টার মধ্যে তাদের মুক্তি দেওয়া না হলে দায় দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে।’
সরকার বিচার বিভাগ থেকে শুরু করে সবই ধ্বংস করেছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এই সরকারের পদত্যাগ চাই। আগামীতে একটি ভালো নির্বাচন হবে। যেখানে জনগণ তাদের ভোট দিতে পারবেন। এখনও সময় আছে, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার বন্ধ করেন, বাসা-বাড়িতে হানা দিবেন না।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মো. আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির তানভীর আহমেদ রবিন, উত্তর বিএনপির আমিনুল হকের পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আহমেদ আযম খান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আতাউর রহমান ঢালী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মীর সরফত আলী সপু, নাসির উদ্দিন অসীম, রকিবুল ইসলাম বকুল, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ইস্পাত কঠিন মনোবল ধরে রেখে শেখ হাসিনার পদত্যাগ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। তাকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে। চিকিত্সকরা তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’
ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আমরা মামলা হামলাবাজ সরকারের বিদায়ের লক্ষ্যে পদযাত্রা করছি। এদের বিদায় নিতে হবে। তারা আমাদের হামলা-মামলা ও পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতায় রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায়। এভাবে কিছুদিন হয়তো টিকে থাকা যায়, তবে চিরদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। আজ হোক বা কাল হোক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে এ সরকারকে বিদায় করব।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা হবে না। কদিন আগে একজন আলেম দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজা নিয়ে কী করল? হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে আমাদের নেত্রীর জানাজা আমরা ঠিকমতো দিতে পারবনা। খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। তিনি কোনো অন্যায় করেননি। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে করতে এতদূর এসেছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই, এই সংসদের বিলুপ্ত চাই।’