নিজস্ব প্রতিবেদক: শুল্ক ছাড়ের পর স্থলবন্দর দিয়ে কম শুল্কে ভারতীয় পেঁয়াজ ঢুকছে দেশের বাজারে। আমদানি করা এসব পেঁয়াজ আসায় কমতে শুরু করেছে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম।
শুক্রবার রাত থেকে চট্টগ্রামের বাজারে শুরু হয়েছে পেঁয়াজ সরবরাহ। এতে পাইকারি বাজারে পাঁচ থেকে ছয় টাকা কমেছে পেঁয়াজের দাম। গত দুই দিনে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯২ থেকে ৯৩ টাকায়। তবে খুচরা পর্যায়ে কমেনি পেঁয়াজের দাম। খুচরা বাজারে এসব পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরেই বিক্রি হচ্ছে।
চট্টগ্রামে ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তম বাজার খাতুনগঞ্জ এলাকায় গত দুই দিনে ৫০ হাজার কেজির বেশি ভারতীয় পেঁয়াজ এসেছে। এতে বাজারে মজুত থাকা পেঁয়াজের দামও কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত রপ্তানি শুল্ক কমিয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশেও পেঁয়াজের আমদানি শুল্ক কমিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। ফলে বাজারে প্রভাবপড়েছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হয়েছিল। এর প্রভাবে পাইকারি বাজারগুলো নিম্নমুখী হতে শুরু করে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুল্ক কমানোর ঘোষণার পর বাজার কমতে শুরু করেছে।
জানা যায়, গত বছর ৮ ডিসেম্বর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সংকটের অজুহাতে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত সরকার। এরপর মার্চ মাসে অনির্দিষ্টকালের জন্য দ্বিতীয় দফায় নিষেধাজ্ঞা দেয়। এতে দেশে পেঁয়াজের সংকট দেখা দেওয়ায় দফায় দফায় দাম বাড়তে থাকে। এরপর প্রায় ৫ মাস পর গত ৪ মে ন্যূনতম ৫৫০ মার্কিন ডলার রপ্তানি মূল্য এবং ৪০ শতাংশ হারে শুল্ক নির্ধারণ করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লা মিঞা মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, দাম নির্ভর করে বাজারের ওপর। বাজার নিম্নমুখী হওয়ায় মজুত থাকা পেঁয়াজগুলোও কম দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। দাম আরও কমতে পারে; কারণ, নতুন আমদানি করা পেঁয়াজগুলোর মান তুলনামূলক ভালো নয়।
পাইকারি বাজার নিম্নমুখী হলেও খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামে এর কোনো প্রভাব নেই। চট্টগ্রামের খুচরা বাজারগুলোতে এখনো প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা। গত এক বছরে চট্টগ্রামের খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় ৭৫ শতাংশ বেড়েছে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। খুচরা বাজারে গত বছর এ সময়ে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা।
চট্টগ্রামের বাজার মূলত আমদানি করা পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল। ভারতীয় পেঁয়াজ বন্ধ থাকায় বিকল্প দেশ হিসেবে পাকিস্তান, চীন ও মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে চাহিদা তুলনামূলক কম ছিল। পাইকারি পর্যায়ে ৮০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে এসব পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরেই বিক্রি হয়েছে।
চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান খালেদ বলেন, পাইকারিতে কমলেও পেঁয়াজের দাম ৬০ টাকার নিচে আসার সম্ভাবনা নেই। খুচরা পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের কিছু পণ্য ওয়েস্ট (নষ্ট) হয়। যার কারণে তাঁরা দাম ধরে রাখেন। তবে সরবরাহ বাড়ছে, দামও কমবে আরও কিছুটা।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে