চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক :মৌসুমি বায়ুর সক্রিয় প্রভাবে কক্সবাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৪০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এটি একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের এই পরিমাণ রেকর্ড করা হয়। যেখানে আরও দুইদিন এই ভারি বর্ষণের আভাস দেওয়া হয়েছে। এতে করে বড় রকমের মানবিক বিপর্যয়ের শংকায় রয়েছে কক্সবাজারের বাসিন্দারা। ইতোমধ্যে শহরের জিলংঝা ও উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ২ পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উখিয়ার সরজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, জালিয়াপালং ইউনিয়নের নম্বরী পাড়া, ঘাটঘর পাড়া পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া ডেইপাড়া মনখালি, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, মনির মার্কেট, রুমখা পালং, বড়বিল, পাতাবাড়ি, নলবুনিয়া, খেওয়া ছড়ি, বৌ বাজার, কুলাল পাড়া, পাগলির বিল, রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালং, মাছকারিয়া, লম্বাশিয়া তুতুরবিল, হিজলিয়া, পিনজির কুল, খালকাচা পাড়া, সিকদার বিল, বাইতুল মামুর, উত্তরপুকুরিয়া, রত্নাপালং ইউনিয়নের সাদৃ কাটা,পশ্চিম রত্না, বড়ুয়াপাড়া, খোন্দকার পাডা, গয়াল মারা ও পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালী, রহমতের বিল, বালুখালী তৈল খোলা, আঞ্জুমান পাড়া ফারিবিলসহ অন্তত ৫০টি গ্রামে পানি তলিয়ে গেছে। চারদিকে পানি আর পানি। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেক গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে কক্সবাজারে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৪০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান মৌসুমে এটি একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টির রেকর্ড। এই বৃষ্টি আরও দুইদিন থাকতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অতিবৃষ্টির কারণে কক্সবাজারের শতাধিক জনপদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে পানিতে নিমজ্জিত । সেই সঙ্গে পাহাড়ি ঢল ও পানি প্রবেশ করে জেলার প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকা এখনও প্লাবিত অবস্থায় আছে। এছাড়া ১২টি পাহাড়ে বড় রকমের ফাটল দেখা দিয়েছে তাতে করে বাড়ছে ভূমিধসের শংকা। এমন ভারি বর্ষণ গত ৫০ বছরেও দেখেনি কেউ এমনটি দাবি স্থানীয়দের।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ জানান, ভারি বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। হোটেল মোটেল জোনের প্রায় ১৮টি রাস্তা এখন পানির নিচে। আমরা পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদেরও সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে প্রেরণ করছি।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ