এমভি আবদুল্লাহ পাহারায় দুই যুদ্ধজাহাজ, চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এখনো উচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা অতিক্রম করেনি। তাই জাহাজটির চারদিকে কাঁটাতারের নিরাপত্তা বেষ্টনী লাগানো হয়েছে। প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে ফায়ার হোস (যেটি দিয়ে জোরে পানি ছিটানো হয়)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আজ মঙ্গলবার কেএসআরএম গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করিম বলেন, কাঁটাতার ও ফায়ার হোস জাহাজের মধ্যে ছিল। এগুলো ওই সময় লাগানো হয়নি, কারণ ওই সময় রিস্ক জোনের অনেক দূরে ছিল। এখন যেহেতু রিস্ক জোনে সে জন্য এগুলো লাগানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এই নিরাপত্তার মধ্যেই আগামী ২২ এপ্রিল (সোমবার) দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছাবে জাহাজটি।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত বেশ কিছু ছবিতে দেখা যায়, কাঁটাতার দিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা। এতে আবারও যাতে কোনো জলদস্যু উঠতে না পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত থাকছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর জাহাজ। এছাড়া আবারও কোনো জলদস্যু হামলা করলে, তা প্রতিহতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।

জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, জাহাজটি বর্তমানে আরব সাগর পাড়ি দিচ্ছে। ফলে সোমালি উপকূল থেকে জাহাজটির দূরত্ব বেশি নয়। এ কারণেই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ীই এই বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা।

কেএসআরএম গ্রুপের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে জাহাজটির চারপাশ কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। দস্যুরা হানা দিলে যাতে উচ্চ চাপে পানি ছিটানো যায়, সেজন্য জাহাজের ডেকে ফায়ার হোস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবার কোনো বিপদ হলে নাবিকেরা যাতে জাহাজে সুরক্ষিত স্থানে লুকাতে পারেন, সে জন্য ‘সিটাডেল’ (জাহাজের গোপন কুঠুরি) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে, ৫৫ কোটি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে গ্রেপ্তার সেই জলদস্যুরা

উত্তর-পূর্ব সোমালিয়ার ফেডারেল রাজ্য পুন্টল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে গ্রেপ্তার জলদস্যুরা ৫ মিলিয়ন ডলার বা ৫৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ২৩ নাবিক ও বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আটজন জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

আজ মঙ্গলবার সোমালিয়ার জনপ্রিয় অনলাইন ‘গারোই অনলাইন ডট কম’ নামে একটি পোর্টাল এই খবর দিয়েছে।

সোমালিয়ার আরেকটি অনলাইন ‘সোমালিয়ান টুডে’ লিখেছে, বাংলাদেশি জাহাজকে ছেড়ে দিয়ে জলদস্যুরা উপকূলের কাছাকাছি লুকিয়ে রয়েছে। তাদের ধরতে সোমালিয়ার পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটি ছিনতাই করা হয়। এর ৩২ দিন পর, অর্থাৎ ৩৩ দিনের জিম্মিদশা থেকে গত শনিবার দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top